কলকাতা: লকডাউন শুরু হওয়ার পরে রোজকার বাজারে আনাজ-সব্জির দাম কিছুটা বাড়লেও তা লাগামছাড়া হয়নি। কিন্তু, ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার পর গ্রীষ্মকালীন সব্জি অগ্নিমূল্য হয়েছে। পটল, বেগুন, ঢেঁড়শ প্রভৃতি অধিকাংশ আনাজপাতি খুচরো বাজারে কেজিতে ৫০ টাকা বা তার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। শিয়ালদহের পাইকারি বাজারে অধিকাংশ সব্জি শুক্রবারও কেজিতে ২৫ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু, স্থানীয় বাজারগুলিতে তরকারিতে হাত দেওয়াই দায় হয়ে উঠেছে।
ঘূর্ণিঝড়ে সব্জির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিকে এই দাম বাড়ার কারণ হিসেবে দেখাচ্ছেন বিক্রেতারা। কিন্তু, হিমঘরে সংরক্ষিত আলু, তার দামও অনেকটাই বেড়েছে। জ্যোতি আলুর দাম ২০-২১ টাকা থেকে বেড়ে ২৪-২৫ টাকা হয়েছে। হিমঘর থেকে বের হওয়ার পর স্থানীয় পাইকারি বাজারেই আলু এখন ২০ টাকা কেজি। ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, হিমঘরে শ্রমিক কম থাকার জন্য আলু কম বের হচ্ছে। স্কুলের মিড ডে মিল প্রকল্পের জন্য সম্প্রতি প্রচুর পরিমাণে আলু গিয়েছে। চাহিদা বেড়ে গেলেও বাজারে তার সরবরাহ কমেছে। কিছুদিনের মধ্যে আলুর দাম কিছুটা কমলেও শেষমেশ ২০-২১ টাকা থাকবে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
এই বাজারে পেঁয়াজের দামটাই যা মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে। খুচরো বাজারে ২০ টাকা কেজি দরের আশপাশে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। বাংলায় পেঁয়াজের ব্যাপক ফলনের জন্য দাম কম আছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। জুলাই মাস পর্যন্ত এখানকার পেঁয়াজ ভালোভাবে স্থানীয় বাজারের চাহিদা মেটাবে।
সব্জির মধ্যে শুধু কুমড়োর দাম তুলনামূলকভাবে কম। খুচরো বাজারে ২০ টাকা কেজি দরেও তা মিলছে। বাঁধাকপি ৪০ টাকার আশপাশে। অন্যদিকে, উচ্ছে ও শশার দাম অনেক বেড়েছে। শশা ৬০-৭০ টাকা ও উচ্ছে ৮০ টাকা কেজি যাচ্ছে। এই অবস্থায় লোকাল ট্রেন চালু থাকলে সব্জির দাম অন্তত কেজিতে ১০ টাকা কম হত বলে মনে করেন রাজ্য সরকারের টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা। লরিতে পরিবহণ খরচ বেশি পড়ে যাচ্ছে। তাঁদের মতে, ট্রেন চালু হওয়া ও মরশুমি সব্জি নতুন করে মাঠ থেকে না-ওঠা পর্যন্ত দাম কমার বিশেষ আশা নেই। ততদিন মধ্যবিত্ত মানুষকে এই ভোগান্তি পোহাতে হবে।