শ্লীলতাহানীর প্রতিবাদকারী যুবককে গুলি করে খুন হরিশচন্দ্রপুরে

পাড়ার এক মেয়ের সঙ্গে অশ্লীল আচরণ করার প্রতিবাদ করেছিলেন প্রতিবেশী এক যুবক, আর তারই জেরে ওই যুবককে গুলি করে খুন করার অভিযোগ উঠল এক দুস্কৃতির বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাত দশটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার করিয়ালি বাজার এলাকায়। প্রকাশ্য রাস্তায় গুলি চালিয়ে প্রতিবাদী ওই যুবককে খুন করে উত্ত্যক্তকারী অভিযুক্ত ওই দুষ্কৃতী বলে অভিযোগ।  

এই ঘটনার পর গোটা এলাকা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবাদী যুবক খুন হবার পর গ্রামবাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্তের বাড়ি ভাঙচুর করে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। রাতেই মৃত যুবকের পরিবারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা পুলিশ। রাতেই গুলিবিদ্ধ যুবকের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। পাশাপাশি পুরো ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। 

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে মৃত যুবকের নাম চাঁদ সিং (২২)। অভিযুক্ত দুষ্কৃতীর নাম কার্তিক রবিদাস।  এই ঘটনায় অভিযুক্তের আরো এক সাগরেদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দুজনেই ঘটনার পর পুখুরিয়া থানার সামসি এলাকায় গা ঢাকা দিয়েছিল বলে জানতে পারে পুলিশ। এরপর ঘটনার রাতেই অভিযান চালিয়ে সামসি এলাকা থেকে কার্তিক রবিদাস সহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাড়ার এক মেয়ের সাথে প্রেম করতো অভিযুক্ত কার্তিক রবি দাস। মাঝে তাদের সম্পর্কে বিচ্ছেদ হয়। এরপর ওই মেয়েটিকে নাকি অভিযুক্ত কার্তিক রবিদাস মাঝে মধ্যে উত্ত্যক্ত করতো বলে অভিযোগ। আর এই নিয়েই প্রতিবাদ করেছিলেন ওই যুবতীর প্রতিবেশী চাঁদ সিং। আর তারই জেরে অভিযুক্ত কার্তিক রবিদাসের সঙ্গে চাঁদ সিংহের বচসা হয়। বদলা নিতেই মঙ্গলবার রাতে প্রকাশ্য রাস্তায় চাঁদ সিং নামে ওই যুবককে বুকে গুলি করে খুন করে অভিযুক্ত ওই দুষ্কৃতী বলে অভিযোগ। 

মৃত যুবকের মা শিবানী সিংহের অভিযোগ, তার ছেলে কোনদিন কোন ঝামেলায় থাকে নি। পাড়ার কোন এক মেয়ের সঙ্গে অভিযুক্ত যুবকের ঝামেলা নিয়ে প্রতিবাদ করেছিল ছেলে। আর তারই জেরে এভাবে প্রকাশ্যে রাস্তায় আমার ছেলেকে গুলি করে খুন করেছে অভিযুক্ত যুবক। তার ফাঁসির দাবি জানিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে।

এদিকে অভিযুক্ত কার্তিক রবি দাসের বিরুদ্ধে এর আগেও খুনের অভিযোগ রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। অভিযুক্তের এক বৌদী চায়না দাস পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তার দেওরের সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু এর আগে এই ধরনের ঘটনা তার দেওর ঘটিয়েছিল। সেদিনের ঘটনার পর অভিযুক্তের বাড়ি ভাঙচুর চালিয়েছে উত্তেজিত জনতা। স্থানীয় সহ পরিবারের লোকজনেরা তার শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছে।

হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয় কুমার দাস জানিয়েছেন, গুলিবিদ্ধের পরিবারের অভিযোগে দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার ২২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চাঁচল মহকুমা আদালতের মাধ্যমে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। পাশাপাশি পুরো ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।