নাম – ডাক হলে দায়িত্ব ও বাড়ে l বিশেষত শিক্ষার সাথে যুক্ত হয়ে যাঁরা কাজ বা অর্থ উপার্জন করেন নানান কৌশলে, সেখানে রোজগারের পাশাপাশি সতর্কতার সাথে দায়িত্ব পালনটাও জরুরী l নাহলে শুধুই চোখে পরে শিক্ষা-ব্যবসার নগ্ন চিত্রটা l শিক্ষা নিয়ে নানা ভাবে নানা স্তরে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা চলছে – শিক্ষিত সমাজ কুলেই l কিন্তু শিক্ষা- ব্যবসাটি অশিক্ষিত হাতে পড়লে সে আরো মারাত্মক l শিক্ষা নিজেই তখন রুগ্ন ও ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে শুধুই অশিক্ষা ছড়াতে থাকে, নীচের ছবি বা ঘটনাটি তারই একটা উদাহরণ মাত্র l
একটি অতি নামী কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সংস্থা নাকি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন Spoken English এর প্রশিক্ষণ দিতেও l দামামা বাজিয়ে যথারীতি তাঁরা প্রচারেও নেমেছেন l ফেসবুকে তাঁদেরই এক প্রচারে চোখে পড়লো তাঁদের বিজ্ঞাপনের banner and flex এবং সাথে ফেসবুকে দেওয়া তাঁদের কিছু তথ্য লিখন l
Spoken English এর advertisement হচ্ছে বাংলা হরফে “স্পোকেন ইংলিশ” লিখে! মানে একেবারে English এ অজ্ঞরাও যাতে Spoken English শিখতে পারে এরকম কিছুর প্রয়াস হবে বোধহয় !! প্রবাদ ও মিথ্যে হয়ে যাবে মনে হচ্ছে – গাছে না উঠেই এক কাঁদি!! কেমন ভাবে হবে তার জন্যে তাঁদের বিজ্ঞাপনে দেখলাম লেখা আছেে “ডেমো”র ব্যবস্থাও আছে l পরে বুঝলাম demonstration মানে প্রদর্শন করে দেখানোর ব্যবস্থা আছে l বাংলা, English, আর বাংলা হরফে English word লেখা তথ্য দিয়ে তাঁদের ফেসবুকের লিখিত বিজ্ঞাপন জুড়ে যেন এক জগাখিচুড়ির আয়োজন l
যাক সবশেষে চোখে পড়লো লেখা “মাসিক পে” আর “অ্যাডমিশন ফিস” l এই শংকর প্রজাতির নতুন ভাষা এই সংস্থার Spoken English-এর যথার্থ প্রশিক্ষণের রূপ-চিত্র যেন চোখের সামনে ফুটে উঠলো l ততক্ষনে “পে” আমার কাছে Pain হয়ে উঠেছে আর Spoken English Class এ যোগদান করতে শুভ কাজে যে “ফিস” অর্থাৎ শুভ কাজে মৎস যে আবশ্যক তা আমার বোধগম্য হয়ে গেছে l কারণ এই বিজ্ঞাপনেই বা advertisement এই Spoken English আর যন্ত্রণা বা pain সহ্য করতে না পেরে নির্ঘাত মারা গেছে l এখন যেন সংস্থাটি Spoken English এর শ্রাদ্ধ ক্রিয়া সম্পন্ন করে ফিস-আদায় অর্থাৎ মৎস-মুখী অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে সকল ছাত্র- ছাত্রীকে English বলতে না পারার অশৌচ কাটিয়ে আহ্বান জানাচ্ছেন আগামী দিনে নতুন এক জগাখিচুড়ি ভাষা রপ্ত করার প্রশিক্ষণে l
অবশ্য এই সব শিক্ষা-প্রশিক্ষণ- সংস্থারা একশো গুণ নিশ্চিত থাকেন যে এই ধরণের শিক্ষার ব্যবসায়িক বিজ্ঞাপন আর প্রচারেই “অ্যাডমিশন” এর নামে ছিপ ফেলতে পারলেই ছাত্র-ছাত্রী নামক ফিস বা মাছ উঠবেই l আগ্রহী ছাত্র-ছাত্রীরা বাধ্যতামূলক ভাবে গিলে ফেলবে অশিক্ষার বড়শিতে শিক্ষা নামক চার দিয়ে ফেলা এই ধরণের টোপ l
শিক্ষা-সংস্থা,প্রশিক্ষণ-সংস্থা, শিক্ষক, প্রশিক্ষক, শিক্ষা-সহায়ক, ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক- অভিভাবিকা সকলের প্রতি একটাই অনুরোধ রেখে গেলাম –
শিক্ষা নিয়ে খুব সাবধানে পা বাড়ান ll