বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করা কোচবিহার পৌরসভার প্রাক্তন পৌর প্রশাসক ভূষণ সিং, পদত্যাগ করলেন বিজেপি থেকেও। ইতিমধ্যেই দলের কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতি রাভা এবং দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে লিখিত পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন তিনি। শুক্রবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একথা জানিয়ে দেন ভূষণ সিং। তবে কোন রাজনৈতিক দলে যোগ দিচ্ছেন, তার ইঙ্গিত দেননি তিনি। বয়স হয়েছে তার, তাই রাজনৈতিকভাবে নয়, ব্যক্তিগত উদ্যোগেই মানুষের জন্য কাজ করে যাবেন নিরলসভাবে। এদিন এই বক্তব্যই তুলে ধরলেন ভূষণ সিং।
এদিন ভূষণ সিং জানান, তৃণমূল কংগ্রেস তাকে পৌর প্রশাসক এর পদে বসিয়ে ছিল, দলের অভ্যন্তরে অন্য কোন সমস্যা ছিল না। তৃণমূলের কোচবিহার শহর ব্লক কমিটির গঠনের ক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতির সাথে তার মতবিরোধ তৈরি হয় এবং তা নিয়ে কলকাতার দলের রাজ্য নেতা সুব্রত বক্সীর সাথে কথাও বলতে যান তিনি। কিন্তু সুব্রত বক্সি নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত থাকায় তার সাথে দেখা করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি ভূষণ বাবুর। এরপর ফিরহাদ হাকিম এর সাথে দেখা করার চেষ্টা করলেও তার ব্যস্ততার কারণে তার সাথে সাক্ষাৎ করতে পারেননি তিনি। এই সময় কলকাতাতেই তার সাথে দেখা হয় শুভেন্দু অধিকারীর এবং তিনি তাকে বলেন তৃণমূল দল কোচবিহার শহরের উন্নয়নের জন্য তাকে কোনরকম অর্থ সাহায্য করবে না, শুধু তাই-ই নয়, পরবর্তীতে মানুষের কাজ করবার জন্য তাকে কোনো সুযোগ দেবেনা। শুভেন্দু অধিকারী তাকে আরও বলেন, রাজ্যে ক্ষমতায় আসছে বিজেপি এবং বিজেপি দল তাকে যোগ্য সম্মান দেবে। শুভেন্দু অধিকারীর এই আশ্বাসে মতিভ্রম হয়ে যায় তার এবং ১এপ্রিল দিনহাটায় বিজেপির জনসভা মঞ্চে শুভেন্দু অধিকারী হাত থেকে বিজেপি দলের পতাকা গ্রহণ করে বিজেপিতে যোগদান করেন তিনি।
তিনি বলেন, বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর দেখা গেছে এই রাজ্যের মানুষ দুহাত ভরে আশীর্বাদ করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এবং বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে রাজ্যের ক্ষমতায় আসীন হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই অবস্থায় বিজেপি প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে। শুধু তাই-ই নয়, করোনা অতিমারি পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে কোনো উদ্যোগ নেই তাদের। কোচবিহার শহর সহ প্রায় বেশিরভাগ বিধানসভা এলাকায় বিজেপির বিধায়ক এবং কোচবিহারের লোকসভার সাংসদ বিজেপি দলের থেকে নির্বাচিত হলেও এই সংকটময় পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে কোন উদ্যোগ নেই তাদের এবং এই কাজ করবার ক্ষেত্রে তার সাথে কোন রকম ভাবে যোগাযোগ করেননি তারা। তাই মানুষের পাশে না থাকতে পেরে কার্যত নাভিশ্বাস উঠছে তার। এছাড়াও বিজেপি এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের সিবিআই এর মাধ্যমে হেনস্থা করছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এসব কিছুর প্রতিবাদ জানিয়ে বিজেপি পরিত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভূষণ সিং।