বিশ্বজুড়ে করোনা দাপট ৷ রোজই সংক্রমণের রেকর্ড ভাঙছে এই ভাইরাস ৷ এরই মাঝে দুবাই কর্তৃপক্ষ আয়োজিত একটি ভার্চুয়াল কনফারেন্সে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান অ্যাডানম গেব্রিয়েসাসের মন্তব্য, ‘বিপদ এখনও কাটেনি ৷ আরও কয়েক দশক ভুগতেই হবে আমাদের। এটা শুধু স্বাস্থ্য সঙ্কট নয়, একই সঙ্গে অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং কিছু দেশের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সঙ্কটও।’ করোনা-যুদ্ধ জিততে সব দেশকেই ফের একজোট হওয়ার ডাক দিলেন তিনি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী করোনাকে মাত দিতে বিশ্বে ১৩৫টি ভ্যাকসিন তৈরি হতে চলেছে ৷ এর মধ্যে ১৩টি কোভিড ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চলছে ও বাকি ১১৫টি রয়েছে প্রাথমিক স্টেজে ৷ এ প্রসঙ্গে WHO প্রধান বলেন, এবছরের শেষেও যদি করোনার কোনও প্রতিষেধক পাওয়া যায়, তাহলেও তা সারা বিশ্বের মানুষের হাতে এই প্রতিষেধক পৌঁছতে আড়াই বছরেরও বেশি সময় লেগে যাবে ৷
গোটা বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ছাড়িয়ে গিয়েছে ৯০ লাখ ৷ জন হপকিঙ্কস ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুযায়ী ইতিমধ্যে করোনায় দুনিয়া জুড়ে মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ৬৯ হাজার মানুষের ৷ শুধু আমেরিকাতেই আক্রান্ত ২২ লাখ ৯১ হাজারের থেকেও বেশি মানুষ ৷ মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ২০ হাজার ৷ আমেরিকার পরেই রয়েছে ব্রাজিল ৷ সেখানে করোনা আক্রান্ত ১০ লাখ ৮৩ হাজারেরও বেশি মানুষ ৷ মৃত ৫০ হাজারেরও বেশি ৷ কোভিড ১৯-এর ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা চললেও পরীক্ষামূলক ট্রায়ালের পর সফল হিসেবে কোনও ভ্যাকসিন এখনও সামনে আসেনি ৷
তবে করোনা মহামারির ক্ষেত্রে আশার আলোও আছে বলে জানিয়েছে হু প্রধান ৷ বহু দেশে প্রকোপ কমেছে করোনার ৷ কয়েকদিন আগে নিউজিল্যান্ডে করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল শূন্য ৷ ১২ মার্চ প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল নেদারল্যান্ডসে। প্রায় ৬ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে সে দেশে। ডাচ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, ২২ জুনের পর দেশটির কোনও প্রান্ত থেকেই নতুন সংক্রমণের খবর মেলেনি। ইতালিতেও করোনা-মৃত্যুর হার ক্রমশ কমছে। ২৪ ঘণ্টায় ইতালিতে মৃত্যু হয়েছে ২৪ জনের। যা ২ মার্চের পর থেকে সবচেয়ে কম।
অন্যদিকে, করোনা চিকিৎসায় কদিন আগেই স্টেরয়েড ডেক্সামিথাসোন প্রয়োগ করার কথা বলেছে হু ৷ যদিও আগেই ব্রিটিশ সরকার এই স্টেরয়েড ব্যবহারে অনুমোদন দিয়েছে ৷ কিন্তু প্রয়োগের অনুমোদন দিলেও ব্যবহার নিয়ে সতর্ক করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ৷ ডাক্তারি পরামর্শ ছাড়া যথেচ্ছ প্রয়োগ প্রাণঘাতী হতে পারে বলে জানানো হয়েছে ৷ উল্লেখ্য, ১৯৭৭ সাল থেকে ডেক্সামিথাসোনকে ইমার্জেন্সি মেডিসিনের তালিকাভুক্ত করেছে হু ৷ এই ওষুধ সহজে মেলে, দামেও সস্তা ৷ করোনা চিকিৎসায় এই ওষুধ প্রয়োগে কার্যকরী ফল মিলবে বলে আশা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৷