দৃঢ়তার সাথে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যাচ্ছে জেলেনস্কি৷ রাশিয়ার সেনা অভিযানে এখনও আগুন জ্বলছে ইউক্রেনে৷ ইউরোপের অধিকাংশ দেশ তো বটেই, রাশিয়ার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে আমেরিকাও৷ ইউক্রেনকে নানা ভাবে সামরিক সাহায্য দেওয়া হলেও সরাসরি রাশিয়ার বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নেয়নি কোনও দেশই৷ ন্যাটো গোষ্ঠীর সদস্য না হওয়ায় এগিয়ে আসেনি ন্যাটো বাহিনীও৷ এই পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এটা বুঝে গিয়েছেন যে, ন্যাটো রাশিয়াকে চটাবে না৷ ফলে তিনিও আর ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার জন্য জোড়াজুড়ি করবেন না৷ টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, তিনি এমন দেশের প্রেসিডেন্ট হতে চান না যারা হাঁটু গেড়ে ভিক্ষে চায়৷
শুধু তা-ই নয়, জেলেনস্কি আরও জানিয়েছেন, রুশপন্থী ডনবাস এলাকার (ডনেৎস্ক ও লুহানস্ক) বর্তমান অবস্থা নিয়েও তিনি খোলা মনে সমঝোতা করতে প্রস্তুত৷ ইউক্রেনের ন্যাটোয় যোগদানের সম্ভাবনা থেকেই সে দেশে সেনা অভিযান শুরু করেন ভ্লাদিমির পুতিন৷ সেনা অভিযান শুরু আগেই রুশপন্থী দুই অঞ্চল ডনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন বলে ঘোষণা করে দেন পুতিন৷ তবে এই সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে রাশিয়াকে প্রচ্ছন্ন বার্তা দিয়ে রাখলেন জেলেনস্কি? সেটা যদি হয়ে থাকে, তাহলে তা যুদ্ধ থামানোর ক্ষেত্রে সহায়ক হলেও হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে৷
রুশ আগ্রাসন রুখতে অন্তত ২০টি দেশ ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট। কিন্তু রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি অস্ত্র তুলে নেয়নি ন্যাটো৷ তাছাড়া ইউক্রেনের আকাশসীমায় উড়ান নিষিদ্ধ না করায় জ়েলেনস্কি বারবার ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। এ দিনও ভিডিয়ো-বার্তায় ক্ষোভের সুরেই জেলেনস্কি বলেন, ‘‘তেরো দিন ধরে শুধু প্রতিশ্রুতির কথা শুনে আসছি। আকাশপথে নাকি আমাদের সাহায্য করা হবে! বিমান পাঠানো হবে৷ কিন্তু এতদিনেও যারা সিদ্ধান্ত নিতে পারল না৷ রাশিয়ার হাত থেকে ইউক্রেনকে সুরক্ষিত করতে পারল না, দায় তাদের উপরেই বর্তাবে৷’’
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ওই সাক্ষাৎকারে আরও বলেছেন যে, ‘‘আমরা বুঝে গিয়েছি, ন্যাটো ইউক্রেনকে সদস্য হিসাবে গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয়। তারা বিতর্কে ভয় পায়৷ রাশিয়ার সঙ্গে সংঘাতে যেতেও নারাজ৷’’ তবে তিনি যে দেশ ছেড়ে পালাননি সেই বার্তাও দিয়েছেন জেলেনস্কি৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি কিয়েভের বাঙ্কোভা স্ট্রিটে আছি। আমি লুকিয়ে নেই। কাউকে ভয়ও পাচ্ছি না। আমি দেশকে ভালোবাসি৷ এই যুদ্ধ জয়ের জন্য যা যা করার প্রয়োজন, আমি করব।’’