অতীতের ভোটপ্রাপ্তির হিসাবে বালিগঞ্জ বিধানসভা আসনে বাকিদের থেকে এগিয়ে রয়েছে তৃনমূল বা বলা চলে এই বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের ধারে কাছে নেই সিপিএম,বিজেপি ও কংগ্রেস। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপি হাওয়ার মধ্যেও দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল প্রার্থী শুধু জেতেননি, ভোট পেয়েছিলেন ৬১ শতাংশের বেশি। বিজেপি ভোট পেয়েছিল ২৭ শতাংশের মতো। আর বামেরা ভোট পেয়েছিল ৫ শতাংশের সামান্য বেশি । তার দু’বছর পর ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে সুব্রত মুখোপাধ্যায় পেয়েছিলেন ৭০ শতাংশের বেশি ভোট। লোকসভা ভোটের থেকে ১ শতাংশ বিন্দুর বেশি ভোট বেড়েছিল। তৃণমূলের দ্বিতীয় স্থানে বিজেপির সঙ্গে তাঁর জয়ের ব্যবধান ছিল ৭৫ হাজারের। বিজেপির ভোট কমে হয়েছিল ২১ শতাংশের মতো। লোকসভায় প্রাপ্ত ভোট ধরে রাখলেও বামেরা খুব বেশি এগোতে পারেনি। ভোট পেয়েছে ৫ শতাংশের সামান্য বেশি।এই বালিগঞ্জের প্র্য়াত বিধায়ক সুব্রত মুখার্জীর মৃত্যুর কারণে উপনির্বাচন তৃণমূলের কাছে জয় চাপের হবে না, সেটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু চর্চায় না থাকা বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন ভোটে এবারের তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়। যেকারনে বিরোধীরা নিশানা তো করছেই, পাশাপাশি চর্চার অন্যতম বিষয় হয়েও ঘুরছে প্রাক্তন বিজেপি নেতা তথা এক সময়ে মোদী সরকারের মন্ত্রী থাকা বাবুলের রাজনৈতিক অতীত। একথা নিজেও জানেন বাবুল। তবে সেই বিজেপি ছেড়ে বেরিয়ে আসার অতীতকে তিনি ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তাঁর মতে, আমি তো অতীতকে অস্বীকার করছি না। তবে বিজেপির কাজের জন্যই আমার গায়ে সাম্প্রদায়িক তকমা লেগেছে। আর এই তকমার কারনে আমি বিজেপিতে থাকাকালীন সবার কাছে পৌছাতে পারিনি। কিন্তু দিদির দলে আসার পরে আমি সবার কাছে নির্দ্বিধায় পৌছাতে পেরেছি। তবে বাবুলের এই মন্তব্যকে সামনে রেখে বিজেপির মত, যদি তিনি বিজেপিতে থাকাকালীন সবার কাছে পৌছাতে পারিনি। তাহলে কিভাবে তিনি পরপর দুবার আসানসোল লোকসভা আসনটি জিতলেন?এদিকে তৃনমূল বাবুলকে বেছে নিলেও বিজেপি থেকে প্রার্থী হয়েছেন কেয়া ঘোষ। পাশাপাশি সিপিএম থেকে প্রার্থী হয়েছেন সায়রা শাহ হালিম। তবে কেয়া যতটা না বাবুলের কাছে চাপের কারন হয়েছে! তাঁর চেয়ে বেশি সায়রাই নিয়েই বাবুল বেশি চাপে রয়েছে, আর এর মূল কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫% সংখ্যালঘু ভোট। সায়রার মতে,বিধানসভা ভোটে বিজেপিকে ঠেকাতে মানুষ তৃণমূলকে ভোট দিয়েছিলেন । মেরুকৃত ভোট হয়েছিল। এবার তাঁরা জনপ্রতিনিধি বাছায়ের সুযোগ পেয়েছেন। তাই বাবুলের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িকতার প্রচারে জোর দিচ্ছেন সায়রা।
উল্লেখ্য, বাবুলের সমর্থনে ইতিমধ্যে মাঠে নেছেছেন অভিষেক বন্দ্যেপাধ্যায়, করেছেন রোড শোও। অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাবুলের হয়ে আবেদন লিখেছেন, সেই আবেদন পত্রে তৃণমূলনেত্রী ভোট চেয়েছেন ‘সুগায়ক বাবুলের জন্য। দুবারের সাংসদ, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুলের রাজনৈতিক সাফলা দূরে থাক, তৃণমূলের খাসতালুক বালিগঞ্জের রাজনীতিক পরিচয়ও এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি।