রাজার শহর কোচবিহার, তাই চারিদিকে ছড়িয়ে রয়েছে রাজ ইতিহাস। সেরকমই ইতিহাস রয়েছে মদনমোহন বাড়ির সন্দেশের। কোচবিহারে থেকে মদনমোহন বাড়ির সন্দেশ খায়নি, এরকম মানুষ নেই বললেই চলে। তাই প্রবাস ও প্রবাসীদের কাছে এই সন্দেশ স্বাদ নস্টালজিয়া। বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে সমাগম কম ভক্তদের, তাই তলানিতে ঠেকেছে সন্দেশ ব্যবসাও। সমস্যায় পড়েছে সন্দেশ ব্যবসায়ীরা। ভক্তের উপর নির্ভর করে আছে তাদের সংসার। দীর্ঘদিন থেকেই তারা সন্দেশ বিক্রি করে আসছে মদনমোহন বাড়ির ঠিক উল্টো দিকে।
গতবার লকডাউন সময় মন্দির বন্ধ রাখতে হয়েছিল প্রশাসনের, সেই সাথে ব্যবসায়ীদেরও পেটে টান ধরে। যদিও বেশ কিছু নিয়ম বিধি মেনে মন্দির খুললেও ভির নেই ভক্তদের। নতুন করে দুশ্চিন্তায় সন্দেশ ব্যবসায়ীরা।
তারা জানান, অনেক বড় বড় মিষ্টির দোকান রয়েছে কোচবিহারে তা সত্ত্বেও, মন্দিরে পুজো দেওয়ার সময় এই ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি ভোগ দেওয়া হয় মন্দিরে। পূর্বপুষাক্রমে বেশ কিছু পরিবার মদন বাড়ির সামনের দোকান দিয়ে সন্দেশ বিক্রি করে আসছেন। সাধারণত বড়ো বড়ো কাসার থালাতেই ঢেকে রাখতে দেখা যায় এই ঐতিহ্যবাহি রকমারি সন্দেশ। তারা আরও জানান যে পূর্বপুরুষ অনুক্রমে তারা ভক্তি সহকারে সন্দেশ তৈরি করে আসছেন। তাদের মধ্যে বিখ্যাত খেজুর গুড়ের সন্দেশ, কমলাভোগ সন্দেশ, ঘিয়ের সন্দেশ ও আমের সন্দেশ। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে বিভিন্ন পূজায়, অন্নপ্রাশনে, বিবাহতে এই সন্দেশ ভোগ হিসেবে অর্পণ করা হত বলে জানান বিক্রেতারা। এবং সেই সময় ভক্তদের সমাগম দেখার মতন সেই সময় তারা খাবার সময় পেতেন না বলেও জানান। আগে ওনারা ২০ থেকে ২৫ কিলো সন্দেশ বানতেন, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে ২ কেজি করে বানান, তাও বিক্রি নেই বলে জানান বিক্রেতারা। গতবার লকডাউন থেকেই বিপদের সম্মুখীন এই সন্দেশ বিক্রেতারা। সামনে রাখি বন্ধন ও ঝুলন উৎসব থাকায় একটু আশার আলো দেখছে ঐতিহ্যবাহী সন্দেশ ব্যবসায়ীরা।