বিগত দু বছর ধরে তান্ডব চালিয়েছে করোনা সংক্রমণ। এখনো পর্যন্ত একইভাবে বজায় রয়েছে সংক্রমনের তান্ডব। এর পাশাপাশি আচমকাই দেখা দিয়েছে মাঙ্কি পক্সের আতঙ্ক। বিদেশের পর এবার কি তবে দেশেও থাবা পড়ল মাঙ্কি পক্সের? উত্তরপ্রদেশের এক শিশুর দেহের সংক্রমণ অন্তত তেমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে। প্রসঙ্গত করোনাকালে বিশ্বজুড়ে নতুন করে ত্রাস সৃষ্টি করছে এই মাঙ্কি পক্স। আফ্রিকার নাইজেরিয়া এই ভাইরাসের আঁতুড়ঘর হলেও ইতিমধ্যেই বিশ্বের প্রায় ২৫ টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে মাঙ্কি পক্সের সংক্রামক ভাইরাস।
আমেরিকা, ব্রিটেন, স্পেনের মতো দেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। মাঙ্কি পক্সের এই বাড়বাড়ন্তে রীতিমতো উদ্বিগ্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। এমন পরিস্থিতিতে এবার জানা যাচ্ছে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের এক পাঁচ বছরের শিশুর শরীরের বেশ কিছু উপসর্গ কয়েকদিন ধরে পরিলক্ষিত হয়েছে যা একজন মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত রোগীর শরীরে দেখা যায়। আর তাতেই ছড়িয়েছে ব্যাপক চাঞ্চল্য।
উত্তরপ্রদেশ স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত কয়েকদিন ধরেই ওই শিশুর শরীরের চুলকানির সমস্যা হচ্ছে। এর সাথেই বিগত কয়েক দিন ধরে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফোস্কার মত দাগ দেখা যাচ্ছে। প্রসঙ্গত এগুলিই মাঙ্কি পক্সের প্রাথমিক উপসর্গ। ফলে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে সবথেকে চিন্তার বিষয় যেটি, সেটি হল গত একমাসে ওই শিশু কিংবা তার পরিবারের কারোরই বিদেশ ভ্রমণের কোনো ইতিহাস নেই। বিদেশ ভ্রমণের যোগ না থাকলেও কিভাবে ওই শিশুর শরীরে মাঙ্কি পক্সের ভাইরাস হানা দিল এখন তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
উল্লেখ্য আমেরিকা ব্রিটেন এমনকি ইউরোপের একাধিক দেশে ইতিমধ্যেই হানা দিয়েছে এই মাঙ্কি পক্সের ভাইরাস। তবে এখনো পর্যন্ত দেশে মাঙ্কি পক্সে আক্রান্তের কোনো হদিস মেলেনি। অন্যদিকে এর বাইরে যাতে কোনোভাবেই দেশে এই ভাইরাস থাবা বসাতে না পারে তাই নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই এই ভাইরাস মোকাবিলায় নতুন করে গাইডলাইন প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে সেই গাইডলাইন পাঠানোর কাজও শেষ হয়েছে।
ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে যদি কোন ব্যক্তির মধ্যে মাঙ্কি পক্সের কোনরকম উপসর্গ দেখা যায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠাতে হবে। মাঙ্কি পক্সের নমুনা পরীক্ষা হবে পুনের NIV তে। এর সঙ্গেই বলা হয়েছে মাঙ্কি পক্সের কোনো উপসর্গ দেখা গেলে সেক্ষেত্রে কমপক্ষে ২১ দিন তার ওপর নজরদারি চালাতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে নিভৃতবাসে থাকতে হবে ও তার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। তার সংস্পর্শে যাওয়ার আগে অবশ্যই PPE কিট ব্যবহার করতে হবে। একইসঙ্গে বিদেশযাত্রার যোগ রয়েছে যাদের তাদের নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে যে, যারা ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, কানাডা থেকে রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ কিংবা দিল্লির মত রাজ্যে প্রবেশ করবেন তাদের বাধ্যতামূলকভাবে স্ক্রিনিং প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।