লাগাতার বৃষ্টিতে কলকাতায় মণ্ডপের কাজ থমকে

মণ্ডপ তৈরি করাবেন কি, লোক লাগিয়ে পার্কের মাঠের কাদা-জল পরিষ্কার করাতেই ব্যস্ত। কেউ গোটা মণ্ডপ ঢেকে ফেললেও কাজ উতরোতে পারছেন না, কিছুই শুকোচ্ছে না বলে! অনেকে মণ্ডপসজ্জার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, আলোর কাজ এখনও শুরুই করতে পারেননি, জলের মধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার আশঙ্কায়। বেশির ভাগ জায়গাতেই মণ্ডপের বাইরের অংশের কাজ শুরুই করা যায়নি। স্টুডিয়োয় বসে কাজ করে নিয়ে এসে মণ্ডপে জুড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন যাঁরা, মাথায় হাত তাঁদেরও! সকলেই জানতে চান, বৃষ্টি ধরবে কবে!

টানা বৃষ্টিতে কলকাতার অধিকাংশ পুজোর উদ্যোক্তাদের পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। সব চেয়ে বেশি চিন্তায় পড়েছেন কলকাতার সেই সমস্ত পুজোর উদ্যোক্তারা, যেগুলিতে ইউনেস্কোর প্রতিনিধিদের যাওয়ার কথা। কারণ, ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ১১ থেকে ১৪ তারিখের মধ্যে শহরের ২৬টি পুজো দেখার কথা ইউনেস্কোর প্রতিনিধিদের। কিন্তু যে হারে বৃষ্টি চলছে, তাতে অন্য পুজোগুলি তো বটেই, তালিকায় থাকা বহু মণ্ডপও কূলকিনারা পাচ্ছে না।

তালিকায় থাকা এমনই একটি পুজো ত্রিধারা সম্মিলনী। সেখানকার পুজোকর্তা দেবাশিস কুমার বললেন, ‘‘কী যে হবে, ভেবে পাচ্ছি না। বৃষ্টি কমার নাম নেই! বিশ্বের দরবারে এ বার বৃষ্টির জন্য না মাথা নিচু হয়ে যায়!’’ জোরকদমে প্রস্তুতি চালানো বালিগঞ্জ কালচারালের পুজোকর্তা অঞ্জন উকিলের আবার দাবি, ‘‘সমস্তটা ঢেকে রেখেও সুরাহা হচ্ছে না। বৃষ্টির মধ্যে শ্রমিকদের বাঁশে উঠিয়ে কাজ করানো যাচ্ছে না।’’ শ্রমিকদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়ে যেতে হচ্ছে। তবু যা হোক করে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে পুজোটাকে দাঁড় করিয়ে ফেলতেই হবে। ইউনেস্কো আসবে বলে কথা!’’তবে, চেতলা অগ্রণীর পুজোকর্তা সমীর ঘোষ এক রকম ধরেই নিয়েছেন যে, এই পরিস্থিতিতে ১১ অক্টোবরের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব নয়। তাঁর কথায়, ‘‘একটা দেওয়ালে কাজ করে ওঠার পরেই বৃষ্টিতে সব ধুয়ে যাচ্ছে। তেমন হলে ইউনেস্কোর প্রতিনিধিরা নির্মীয়মাণ মণ্ডপই ঘুরে দেখবেন।’’