ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে পুরনো কাঁটাতারের বেড়া ভেঙে নতুন করে ঘেরার কাজ

কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের উদ্যোগে এবং বিএসএফের নজরদারিতে রায়গঞ্জের বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতের নানা এলাকায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে পুরনো কাঁটাতারের বেড়া ভেঙে নতুন করে তা ঘেরার কাজ চলছে। এই পরিস্থিতিতে, বুধবার ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের বহর, আগাবহর ও মন্নগর মৌজার বাসিন্দাদের একাংশ কর্ণজোড়ায় গিয়ে লিখিত ভাবে জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনার দফতরে বর্তমান সীমান্ত থেকে বাংলাদেশের দিকে ১৫০ মিটার দূরে ভারতীয় ভূখণ্ডে কাঁটাতার সরানোর দাবিতে গণস্বাক্ষর সংবলিত স্মারকলিপি জমা দেন।

আন্দোলনকারীদের বেশির ভাগই পেশায় চাষি। সীমান্তের ও পারে ভারতীয় ভূখন্ডে তাঁদের কৃষিজমি রয়েছে। তাঁদের তরফে বহরের বাসিন্দা গোপালচন্দ্র বর্মণ ও উদয় বর্মণের দাবি, ১৯৯৭-১৯৯৮ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী ওই তিনটি মৌজায় বর্তমান সীমান্ত থেকে বাংলাদেশের দিকে ১৫০ মিটার দূরে কাঁটাতারের বেড়া বসানোর কথা ছিল। কিন্তু তা না হওয়ায় তিনটি মৌজার কয়েকশো চাষির জমি কাঁটাতারের ও পারে বাংলাদেশের দিকে ভারতীয় জমিতে চলে যায়। গোপাল বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে চাষিদের বিএসএফের সময় অনুযায়ী কাঁটাতারের ও পারে গিয়ে চাষবাস করতে সমস্যা হচ্ছে। মাঝেমধ্যেই বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা ফসল লুট করে পালাচ্ছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে সীমান্তের ও পারের জমিতে আমরা পাট ও ভুট্টা চাষ করতে পারছি না।” উদয়ের দাবি, বর্তমানে কাঁটাতার ঘেঁষে গ্রামে যাতায়াতের রাস্তা রয়েছে। ফলে, ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে তিনটি মৌজার বাসিন্দাদের বিএসএফের নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। আন্দোলনকারীদের দাবি, সীমান্তে পুরনো কাঁটাতারের বেড়া ভেঙে যেহেতু নতুন করে বেড়া দেওয়ার কাজ চলছে, তাই বাসিন্দারা জেলাশাসকের কাছে আগের সমীক্ষা অনুযায়ী কাঁটাতারের বেড়া বাংলাদেশের দিকে ১৫০ মিটার দূরে ভারতীয় ভূখণ্ডে তৈরির দাবি জানিয়েছেন।

 ওই কাজ হলে বাসিন্দাদের জমি যেমন কাঁটাতারের এ পারে চলে আসবে, তেমনই সীমান্ত লাগোয়া গ্রামের রাস্তা দিয়ে হাঁটাচলা করতেও তাঁদের সমস্যা হবে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ কার্তিকচন্দ্র পাল, বিসএফ কর্তৃপক্ষ ও কেন্দ্রীয় সরকারের নানা মহলে তাঁরা ওই দাবির প্রতিলিপি পাঠিয়েছেন। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।” অন্য দিকে, বিএসএফের দাবি, কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত শীর্ষস্তর থেকে নির্দেশ না মিললে সীমান্তে কাঁটাতার সরানো কোনও ভাবেই সম্ভবপর নয়।