অতিক্রম করে চলেছে সময়, কিন্তু কোনো পরিস্থিতিতেই থামছে না যুদ্ধ। দেখতে দেখতে যুদ্ধের ৫ মাস পূর্তি তবুও আজও অব্যাহত যুদ্ধ পরিস্থিতি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে বিশেষ সামরিক অভিযানের নাম করে ইউক্রেনে যে আগ্রাসন শুরু করেছিল পুতিন বাহিনী তা আজও অব্যাহত।
বিগত এই কয়েক মাসে একের পর এক জোরালো ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইতিমধ্যেই ইউক্রেনের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ শহর ধ্বংসস্তূপের রূপ নিয়েছে। দিন কয়েক আগে রুশ বাহিনীর তরফ থেকে এমন দাবিও করতে শোনা গিয়েছে যে ইতিমধ্যেই জেলেনস্কির দেশের প্রায় ৩৫ শতাংশ দখল করে নিয়েছে রাশিয়ার সেনা আধিকারিকরা।
এমতাবস্থায় জানা যাচ্ছে ইউক্রেনীয় বাহিনীর হাতছাড়া হতে চলেছে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর সেভেরোদোনেৎস্ক। জানা যাচ্ছে ইউক্রেনের এই শহর থেকে ইতিমধ্যেই রুশ বাহিনীর চাপে পিছু হটতে শুরু করেছে ইউক্রেনীয় সেনা। সূত্রের খবর, ইউক্রেন সরকার এই শহর থেকে ইতিমধ্যেই সেনা আধিকারিকদের প্রত্যাহার করে ইতিমধ্যেই তা রাশিয়ানদের হাতে প্রায় তুলে দিয়েছেন।
এক্ষেত্রে বলে রাখা ভাল ইউক্রেনীয়দের জন্য এই শহর নিজেদের দখলে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ এই শহরই লুহানসস্কের প্রবেশপথ। প্রসঙ্গত, এই লুহানসস্কের দখলদারিকে কেন্দ্র করেই সংঘাতের পথে হেঁটেছে এই দুই দেশ। এখন যদি রুশ সেনারা লিসিচানস্ক এবং সেভেরোদোনেৎস্ক শহর দখলে নেয়, তা হলে সমগ্র লুহানস্ক অঞ্চল মস্কোর নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে।
সেভেরোদোনেৎস্ক পূর্ব ইউক্রেনীয় অঞ্চলের শহরগুলির মধ্যে প্রধান এবং শেষ ইউক্রেনীয় দুর্গগুলির মধ্যে একটি। ইউক্রেনের এক শীর্ষ সেনাকর্তার মতে, যুদ্ধদীর্ণ এই অঞ্চলে মৃতের সংখ্যা প্রতিনিয়তই বাড়ছে। এই শহর রক্ষা করতে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার ইউক্রেনীয় সেনার মৃত্যু হয়েছে। আর সেই কারণেই নিজেদের অবস্থান থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউক্রেন।
প্রসঙ্গত, অনেক দিন আগে থেকেই ইউক্রেনের সেভেরোদোনেৎস্ক শহর দখলের লড়াইয়ে ভয়ানক যুদ্ধে মেতেছিল মস্কো এবং কিভের সেনাবাহিনী। মাত্র এক সপ্তাহ চলেছিল সেই সামরিক লড়াই, আর তাতেই প্রায় হাজারেরও বেশী ইউক্রেনীয় সেনার মৃত্যু হয়েছিল।
অন্যদিকে, সেভেরোদোনেৎস্ক রক্ষার দায়িত্বে থাকা ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর এক প্রধান ওলেক্সান্ডার স্ট্রাইউক আগে জানিয়েছিলেন, এই শহরের সাধারণ নাগরিকদের অবস্থা দুর্বিষহ। বাইরে থেকে পণ্য সরবরাহ করাও আর সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে শহরে জল সরবরাহও সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে। যার ফলে ভয়ঙ্কর দুর্দশার মধ্যে রাত কাটাচ্ছেন সেভেরোদোনেৎস্ক শহরের নাগরিকরা।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করে রাশিয়া। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন চার মাস পেরিয়ে পঞ্চম মাসে পড়ল। বর্তমানে দেশটির পূর্বাঞ্চলে তীব্র লড়াই হচ্ছে। এর আগে একে একে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ, চেরনোবিল, সুমির মতো গুরুত্বপূর্ণ শহর সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে রুশ তাণ্ডবে।