গতকাল থেকেই তোড়জোড় শুরু করেছিলেন সিবিআইরা। অবশেষে গুঞ্জনই সত্যি হল। তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে বৃহস্পতিবার সকালে বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়ি থেকে সিবিআই আধিকারিকদের হাতে ‘গ্রেফতার’ হলেন বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।
এদিন সকাল থেকেই অনুব্রতর বাসভবনকে কেন্দ্র করে চলে টানটান উত্তেজনা। বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা নাগাদ কার্যত বিনা নোটিশেই অনুব্রতর বাড়িতে হাজির হন সিবিআইয়ের অন্তত ৩০ জন আধিকারিকের একটি দল। সঙ্গে ছিল একশোরও বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্য।
তাঁরা প্রথমেই বাড়িটিকে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলেন এবং পরে অনুব্রতর বাড়িতে ঢুকে বন্ধ করে দেওয়া হয় সদর দরজা। এরপর বাড়ির সকলের ফোন বাজেয়াপ্ত করে অনুব্রতকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন সিবিআই আধিকারিকরা।
সূত্রের খবর তাতেই সহযোগিতা করেননি অনুব্রত। এরপরেই তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে সিবিআইয়ের হাতে ‘গ্রেফতার’ হন তিনি। তবে জানা যাচ্ছে বৃহস্পতিবার নয় বরং বুধবার মধ্যরাত থেকেই অনুব্রতকে গ্রেফতারির ঘুঁটি সাজাচ্ছিল সিবিআই।
ঘনিষ্ঠ মঙ্গল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার মাঝরাত প্রায় ১ টার সময় বোলপুরে পৌঁছয় সিবিআইয়ের দল। হোটেলে বাকি রাত কাটানোর পর সকাল সকালই অনুব্রতর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন সিবিআই আধিকারিকরা।
সিবিআই আধিকারিকদের সঙ্গে একজন ব্যাংক কর্মীকেও সঙ্গে নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সঙ্গে ছিলেন চারজন মহিলা সিআরপিএফ। এদিন সকাল দশটা নাগাদ অনুব্রতর বাড়িতে সিবিআই আধিকারিকরা পৌঁছেই সর্বপ্রথম বাড়ির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মীদের বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
এদিন সকাল থেকে অনুব্রতর বাড়িতে সিবিআই আধিকারিকরা ছাড়া একমাত্র ছিলেন অনুব্রতর প্রধান নিরাপত্তারক্ষী। তাকে ছাড়া আর কাউকেই বাড়ির ভিতরে ঢুকতে অনুমতি দেননি সিবিআই আধিকারিকরা।
উল্লেখ্য গতকাল অর্থাৎ বুধবারই অনুব্রত মণ্ডল সিবিআইকে চিঠি দিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ থেকে বিরত থাকতে ১৪ দিনের সময় চান। কিন্তু সিবিআই যে সেই অনুমতি দেয়নি বৃহস্পতিবার সকালেই তা স্পষ্ট। জানা গিয়েছে, বুধবার রাতেই সিবিআই আধিকারিকদের মোট পাঁচটি গাড়ি বোলপুরে পৌঁছেছিল।
যার মধ্যে তিনটি আবার সরাসরি কলকাতার নিজাম প্যালেস থেকে গিয়েছে। বাকি দুটি গাড়ি আসে আসানসোলের সিবিআই দপ্তর থেকে। বৃহস্পতিবার সকালে এই গাড়ির কনভয় করেই অনুব্রত মণ্ডলকে বাসভবন থেকে বের করে আনা হয়। আপাতত অনুব্রত মণ্ডলকে দুর্গাপুর ক্যাম্প অফিসে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে খবর।