এই মুহূর্তে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির পর গরুপাচার কাণ্ডে রাজ্যে জুড়ে তোলপাড় পরিস্থিতি। এই পরিস্থিতিতে শ্রাবণ মাসের শেষ সোমবার পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল অনুব্রত মণ্ডলের বোলপুরের নীচুপট্টির বাড়িতে৷ ছাদে বাঁধা হয়েছিল প্যান্ডেল৷
কিন্তু, আপাতত সিবিআই হেফাজতে কেষ্ট৷ তাই বাতিল করা হল যজ্ঞের অনুষ্ঠান৷ খুলে ফেলা হচ্ছে মণ্ডপ৷ আজ সকাল থেকেই দেখা যায় মণ্ডপ খোলার তৎপরতা৷
বিপদের পদধ্বনি শুনলেই যজ্ঞের আয়োজন করতেন অনুব্রত৷ কখনো তারাপীঠ, কখনো কঙ্গালীতলা। মাঝেমধ্যে বাড়িতেও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেন তৃণমূলের এই দাপুটে নেতা৷
এবারে নিজের বাড়ির ছাদেই ১৫ অগাস্ট মহাযজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই যজ্ঞ আর করা হল না। যজ্ঞে আহুতি দেওয়ার আগেই সিবিআই হেফাজতে চলে যান তিনি৷ বীরভূমে তৃণমূল জেলা সভাপতি গ্রেফতার হতেই বাতিল সব আয়োজন৷
অনুব্রত বরাবরই কালী ভক্ত বলে পরিচিত৷ তাঁকে মাঝেমধ্যেই তারাপীঠ বা কঙ্কালীতলায় দেখা যেত পুজো দিতে। কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়লেই মায়ের শরণ নিতেন তিনি৷ এবারও কি সংকট মোচনেই যজ্ঞের আয়োজন করেছিলন অনুব্রত? তৃ
ণমূলের দাপুটে নেতা হলেও অনুব্রত ধর্মভীরু৷ কালীপুজোয় সোনার হার গড়িয়ে দিয়েছিলেন মা কালীকে। একুশের ভোটের আগে কঙ্কালী তলায় বিশাল যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন৷ এরপর ভোটের ফল প্রকাশ হতেই তারাপীঠের মন্দিরে যজ্ঞ করেছিলেন অনুব্রত। সেট অবশ্য ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যের জয়ের জন্য৷ এবার হয়তো সিবিআই-এর হাত থেকে বাঁচাতে নিজের জন্যই যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন!
এদিকে, প্রতিদিন অনুব্রতর বাড়ির সামনে যে চিত্র দেখা যায়, আজ তেমনটা চোখে পড়িনি৷ বাড়ির আশপাশ পুরো শুনশান৷ প্রতিদিন এই নীচুপট্টির বাড়িতেই ভিড় জমাতেন দলীয় নেতা কর্মীরা৷ আসতেন স্থানীয় বাসিন্দারাও৷
কেউ আসতেন দাদার সঙ্গে দেখা করতে, কেউ আসতেন দরকারে৷ পঞ্চায়েত ভোটের আগে অনুব্রতর গ্রেফতারি দলের কর্মীদের মনোবল অনেকটাই ভেঙে দেবে বলে মনে করছে জেলা নেতৃত্ব৷ পাশাপাশি পঞ্চায়েত ভোটে জেলায় দল কী কর্মসূচি নেবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷ জেলার দায়িত্ব কার হাতে দেওয়া হবে,তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে৷
গতকাল সিবিআই যখন অনুব্রতকে তুলে নিয়ে গেল, তখন কেউ প্রতিবাদ করল না৷ যে নেতার দাপটে বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খেত, সেই কেষ্টকে অনায়াসেই তুলে নিয়ে গেল সিবিআই। এখন খাঁ খাঁ করছে নীচুপট্টির বাড়ি। দরজা জানলা সব বন্ধ।