গত মাসেই সরকারের তরফে ঘোষিত হয়েছিল অগ্নিপথ প্রকল্পের। এবার এই অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরুদ্ধে দায়ের করা সমস্ত মামলার দায়ভার দিল্লি হাইকোর্টকে সমর্পণ করল দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট।
জানা যাচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরুদ্ধে দায়ের করা সমস্ত পিটিশনগুলোর শুনানির আবেদন দিল্লি হাইকোর্টে স্থানান্তরিত করার নির্দেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট দিল্লি হাইকোর্টকে অগ্নিপথ প্রকল্পকে চ্যালেঞ্জ করা সমস্ত পিটিসনগুলির দ্রুত শুনানি এবং নিষ্পত্তির নির্দেশও দিয়েছে বলে খবর।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরুদ্ধে করা আবেদনের শুনানি ছিল। সেই সময়ই বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন তিনটি আবেদন দিল্লি হাইকোর্টে শুনানির জন্য স্থানান্তরের নির্দেশ দেন বলে খবর।
এছাড়া সুপ্রিম নির্দেশে এবার থেকে দিল্লি হাইকোর্টেই অগ্নিপথ প্রকল্প সম্পর্কিত অন্যান্য উচ্চ আদালতে দায়ের করার সমস্ত পিটিশনগুলিরও শুনানি হবে বলে জানান তিনি। আদালতের পর্যবেক্ষণ, কেন্দ্রীয় সরকারের এই বিতর্কিত প্রকল্প নিয়ে দেশের বিভিন্ন হাইকোর্টে একাধিক আবেদন জমা পড়েছে।
যেগুলো নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হলে অবিলম্বে সমস্ত আবেদন এক জায়গায় এনে শোনা প্রয়োজন। মূলত সেই কারণেই বিচারপতি চন্দ্রচূড় অবিলম্বে সমস্ত আবেদন বদলির নির্দেশ দেন বলে আদালত সূত্রে খবর।
উল্লেখ্য গত মাসে ভারতীয় সেনার সশস্ত্র তিন বাহিনীতে নিয়োগের প্রকল্প অগ্নিপথের কথা ঘোষণা করা হয় কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে। এরপরই দেশ জুড়ে জ্বলে ওঠে বিদ্রোহ সমালোচনার আগুন। অগ্নিপথ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের মানুষকে বোকা বানানো হচ্ছে এই দাবি তুলে অবিলম্বে এই প্রকল্প প্রত্যাহারের দাবিতে দেশজুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ আন্দোলন।
একইভাবে বিভিন্ন রাজ্যের আদালতে এই প্রকল্পকে অবিলম্বে স্থগিত করা, পুনরায় তার পর্যালোচনা করা, এমনকি তা বাতিল করার মতো দাবি তুলেও আবেদনপত্র জমা দেওয়া হয়। আবেদনকারীদের আরও দাবি ছিল যারা ইতিমধ্যেই সেনার চাকরি পাওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে এই প্রকল্প অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
উল্লেখ্য অগ্নিপথ প্রকল্পের মাধ্যমে চার বছরের জন্য ভারতের তিন সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রায় ২ লক্ষ অগ্নিবীরকে এই প্রকল্পের মাধ্যমে ভারতের তিন বাহিনীতে নিয়োগ করা হবে, যার মধ্যে ২৫ শতাংশ জওয়ানকে পরবর্তীতে কাজের সুযোগ দেওয়া হলেও ৭৫ শতাংশ তরুণ-তরুণী চার বছর পরেই অবসর নেবেন।
সরকারের বক্তব্য অবসরপ্রাপ্ত জওয়ানদের অন্যত্র চাকরিতেও সাহায্য করবে সরকার। কিন্তু সরকারের এই প্রকল্পের বিরুদ্ধেই দেশজুড়ে শুরু হয় আন্দোলন। সুপ্রিম কোর্টেও পরপর তিনটি পিটিশন দাখিল হয় অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরুদ্ধে।