ক্রমাগত অসমে বেড়ে চলেছে মৃত্যুর সংখ্যা

একনাগাড়ে বৃষ্টির ফলে দেখা দিয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। কিন্তু তাও বৃষ্টি কমার নাম নেই। খারাপ হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। সবে মিলে এই মুহূর্তে অসম সাক্ষাৎ মৃত্যুপুরী। জানা যাচ্ছে বন্যা পরিস্থিতিতে ইতিমধ্যেই অসমে মৃতের সংখ্যা আরও বেড়েছে। অন্যদিকে এই রাজ্যের বেশকিছু জেলার বন্যা পরিস্থিতি নদীতে জলবৃদ্ধি ও ধসের জেরে আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সরকারি হিসাব মতে, বন্যা পরিস্থিতিতে ৬৭ জেলার প্রায় ৫.৮ লক্ষের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত এবং তাদের মধ্যে অধিকাংশই প্রাণ বাঁচাতে ঘরছাড়া।

অসম বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর সূত্রে খবর, বরপেটা, কাছাড়, দারাং, ধুব্রি, ডিব্রুগড়, ডিম হাসাও, গোয়ালপাড়া, গোলাঘাট, হোজাই, জোরহাট, কামরূপ এবং কামরূপ মেট্রোপলিটন, কার্বি আংলং পশ্চিম, করিমগঞ্জ, লখিমপুর এবং নওগাঁও  জেলার একাধিক অঞ্চল এই মুহূর্তে জলের তলায়। এই জেলাগুলির প্রায় ১৩৭৪ টি গ্রাম এই মুহূর্তে বন্যা কবলিত বলে জানা গিয়েছে। বন্যার জেরে ইতিমধ্যেই ৬৪০৯৮.৯২ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়াও বহু জেলার রাস্তা, বাঁধ, সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর। বন্যা কবলিত এই সমস্ত গ্রামের মানুষদের সাহায্যার্থে সরকারি তরফে এই মুহূর্তে মোট ৫২৮ টি ত্রাণ শিবির চলছে রাজ্য জুড়ে। ১২ টি জেলায় খোলা হয়েছে ডিসট্রিবিউশন সেন্টার, যেখানে প্রায় ৮১ হাজার ৭১২জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন, যাদের মধ্যে আবার ১৮ হাজার ১০৭ জন শিশু।

অন্যদিকে জানা যাচ্ছে প্রায় সপ্তাহব্যাপী এই বন্যা পরিস্থিতিতে ইতিমধ্যেই অসমে প্রায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে জাতীয় এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর প্রায় ২৫৩ জনকে সাক্ষাৎ মৃত্যুর হাত থেকে উদ্ধার করেছে বলে খবর। জানা যাচ্ছে এই বন্যায় অসমের নওগাঁও জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। সেখানে প্রায় ৩.৪৬ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কাছাড়ে ২.২৯ লাখেরও বেশি মানুষ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। হোজাই জেলায় ৫৮ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বন্যা পরিস্থিতিতে প্রশাসনের তরফে দুর্গতদের জন্য ৪২৭৮.৪৫ ক্যুইন্টাল চাল, ডাল, নুন ও ২৫৫৫.৯৭ লিটার সরষের তেল, ১২৩২.৪১ ক্যুইন্টাল পশুখাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।

অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এই বন্যা প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, বন্যা-বিধ্বস্ত জেলাগুলিতে ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। দুর্গতদের সাহায্যের জন্য ডিমা হাসাও জেলায় ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছে বায়ুসেনা। অসমের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বন্যায় বিধ্বস্ত এলাকায় দুর্গতদের জন্য ত্রাণ পৌঁছে দিয়ে সরকার সবরকম ব্যবস্থা নিয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। টুইট করে অমিত শাহ জানিয়েছেন, ‘ইতিমধ্যেই NDRF দল মোতায়েন করা হয়েছে। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।’