উপস্থিত হলো বহু প্রতীক্ষিত সময়, প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করলেন পদ্মা সেতুর

অবশেষে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটলো। উপস্থিত হলো বহু প্রতীক্ষিত সময়। নতুন ইতিহাস তৈরি করল বাংলাদেশ। দেশের মানুষের জন্য খুলে গেল আরও এক নতুন সম্ভাবনার দরজা। উদ্বোধন হল গর্বের পদ্মা সেতুর। বহু প্রতীক্ষিত সেতুর উদ্বোধন করলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাওয়া প্রান্তে কয়েক লক্ষ দেশবাসীর উপস্থিতিতে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হল এই সেতু।

পদ্মা সেতুর এই উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে দেশবাসীর পাশাপাশি আবেগে গা ভাসালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। আর তাই সেতু উদ্বোধনের ঠিক আগেই প্রধানমন্ত্রীর চোখে দেখা গেল আনন্দ আশ্রু। তাঁর কথায়, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ হল আজ। অনেক ষড়যন্ত্র ছিন্ন করে আজ আমরা শেষ পর্যন্ত পদ্মা সেতু উদ্বোধন করতে পারলাম।’ এর সঙ্গে নিজের দৃঢ় ব্যক্তিত্বকে আরও একবার সামনে এনে হাসিনার ঘোষণা, ‘আমরা আগেও মাথা নত করিনি। এরপরেও কখনো করবো না।’

উল্লেখ্য কোন রকম বিদেশী সংস্থার আর্থিক সাহায্য না নিয়ে সম্পূর্ণ সরকারি প্রচেষ্টায় এই পদ্মা সেতু গড়ে তুলেছে বাংলাদেশ সরকার। সে কথাই আরো একবার গর্বের সঙ্গে বলতে দেখা গেল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে। একইসঙ্গে এদিন হাসিনা দাবি করেন এই সেতু নির্মাণে কোনরকম দুর্নীতি হয়নি।

উল্লেখ্য, প্রমত্তা পদ্মার উপরে গড়ে তোলা এই সেতুই দেশের উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার আরো উন্নতি সাধন করতে সক্ষম হবে। খরস্রোতা পদ্মার কারণে এই দুই পাড়ের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করা কয়েক দশক আগে পর্যন্ত একটি স্বপ্ন ছিল মাত্র। কিন্তু সেই স্বপ্নই বাস্তবায়িত করল বাংলাদেশ।

এদিনের সেতু উদ্বোধন করতে এসে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই সেতু শুধু ইট, সিমেন্ট, লোহা কংক্রিটের একটি অবকাঠামো নয় এই সেতু আমাদের অহংকার আমাদের গর্ব, আমাদের সক্ষমতা এবং আত্ম মর্যাদার প্রতীক। এই সেতুর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের আবেগ, সৃজনশীলতা, সাহসিকতা, সহনশীলতা এবং জেদ।’

উল্লেখ্য এই সেতুর মাধ্যমে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ টি জেলার মানুষ সহজেই ঢাকায় পৌঁছতে পারবেন। সেতুটি ৬ কিলোমিটার লম্বা এবং দ্বিতল। এর একতালাতে চলবে বাস, গাড়ি এবং যানবাহন এবং অপর তলায় চলবে ট্রেন। এই সেতু ডিজাইন তৈরি হয়েছিল ২০০৮ সালে এবং সেটি তৈরি করতে খরচ পড়ল প্রায় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৮ লাখ ৭৬ হাজার বাংলাদেশী মুদ্রা।