দেশ জুড়ে শোকের ছায়া। চব্বিশ ঘণ্টা পরেও মানুষের বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে যে তিনি আর নেই। ভারতীয় সংগীত জগতে আরও একটি অভিশপ্ত দিন। মঙ্গলবার রাতে লাইভ পারফরম্যান্স শেষের পরেই হঠাৎ না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় প্লেব্যাক সিঙ্গার কেকে। সোমবার এবং মঙ্গলবার কলকাতার নজরুল মঞ্চে ব্যাক-টু-ব্যাক দুটি লাইভ অনুষ্ঠান ছিল কেকের মঙ্গলবার সেই অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার পরেই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এই সংগীতশিল্পী। হোটেলে ফিরে অচৈতন্য হয়ে পড়েন কেকে এবং তাকে সঙ্গে সঙ্গে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা কেকেকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রিয় গায়কের এমন অপ্রত্যাশিত মৃত্যু যেন মেনেই নিতে পারছেন না ভারতের কোটি কোটি কেকে অনুরাগীরা।
নব্বইয়ের দশক থেকে একের পর এক জনপ্রিয় এবং লোকপ্রিয় গানে গলা দিয়েছেন যে গায়ক জীবনের শেষ লগ্নে এসেও তিনি যে মাইক হাতে এভাবে পৃথিবী থেকে বিদায় নেবেন তা কল্পনাই করতে পারছেন না কেউ। বুধবার সকালে কলকাতা থেকে কেকের মরদেহ মুম্বইয়ের বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে কলকাতায় এসেছিলেন কেকের স্ত্রী এবং পুত্র। বুধবার দুপুরে কলকাতার রবীন্দ্রসদনে গান স্যালুটের মাধ্যমে গায়ককে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে বিমানে করে মুম্বইয়ে কেকের দেহ ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সেখনেই হবে কেকের শেষকৃত্য, পরিবার সূত্রে খবর এমনটাই।
বুধবার বিকেল পাঁচটা পনেরোর ফ্লাইটে করে কেকের দেহ কলকাতা থেকে মুম্বইয়ে পৌঁছাবে। এরপর বুধবার সারারাত কেকের মরদেহ ফ্রিজারে রাখা হবে বলে খবর। বুধবার সকালে কেকের বাড়িতে কিছুক্ষণ তাঁর মরদেহ রেখে তারপর শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হবে। পঞ্চভূতে বিলীন হবেন দেশের ‘প্রেমের গায়ক’ কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে।
অন্যদিকে তাঁর এমন আকস্মিক মৃত্যু যেন মেনেই নিতে পারছেন না বলিউডের অন্যান্য গায়ক, সুরকাররা। কেকের প্রয়াণের খবর শুনেই রীতিমতো বাকরুদ্ধ প্রখ্যাত গায়িকা উষা উত্থুপ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঊষা লেখেন, ‘আমি কি বলব বুঝতে পারছি না, আমি বাকরুদ্ধ।’ অন্যদিকে বলিউড ও দক্ষিণী সিনেমার আরেক জনপ্রিয় সুরকার তথা গায়ক এ আর রহমান বারবার প্রশ্ন করছেন কি এমন তাড়া ছিল? কেন এত তাড়াহুড়ো করে চলে যেতে হল। সোশ্যাল মিডিয়ার রহমান আরও লিখেছেন, ‘তোমার মত গায়ক পাওয়া একটি পুরস্কার ছাড়া আর কিছুই নয়। তুমি বহু মানুষের জীবন আরও সহনীয় করে তুলেছ।’
অন্যদিকে হিমেশ রেশামিয়া কেকের সঙ্গে শেষ সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘আমার মনে আছে আমার সাথে শেষ দেখা হয়েছিল যখন আমরা মুম্বাই ফেরার পথে বিমানবন্দরের একই লাউঞ্জে অপেক্ষা করছিলাম। আমরা দুজনে একই শহরে পারফর্ম করতে গিয়েছিলাম এবং সেদিন আমাদের দুজনের মধ্যে অনেকক্ষণ হাসি-ঠাট্টা হয়েছিল। এখনও আমি মানতে পারছি না যে কেকে নেই। তিনি একজন কিংবদন্তি গায়ক ছিলেন।’