করোনা সংক্রমণের আতঙ্ক কাটিয়ে উঠে এবার ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরেছে রাজ্যের পড়তে থাকা অর্থনৈতিক পরিস্থিতি। করোনা সংক্রমণ, লকডাউন অবহেও বজায় ছিল রাজ্যের জিএসটি আদায়৷ এই পরিস্থিতিতেও বেড়েছে রাজ্যের জিএসটি আদায়৷ গত অর্থবর্ষের তুলনায় এবার প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা বেশি জিএসটি আদায় হয়েছে। কথামতো কেন্দ্রের তরফে জিএসটি ক্ষতিপূরণের টাকা এখনও না মেটানোয় আপাতত এতেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গকে। ডিসেম্বর মাস হয়ে গেলেও, চলতি অর্থবর্ষের বকেয়া টাকা যেমন কেন্দ্রের তরফে মেলেনি, তেমনই গত অর্থবর্ষের টাকাও এখনও বকেয়া রয়েছে। কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের মোট বকেয়া প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। সেই টাকা কবে মেটাবে মোদি সরকার, তা জানা নেই নবান্নের কারওরই।
পণ্য বা পরিষেবা বিক্রি হয় যেখানে, জিএসটি আদায় হয় সেখানেই। অর্থাৎ পণ্য যেখানেই উৎপাদিত হোক, ক্রেতারা যে রাজ্যে মূল্য দিয়ে তা কেনেন, সেই রাজ্যের ভাঁড়ারে আসে জিএসটি বাবদ করের টাকা। রাজ্য অর্থদপ্তরের তথ্য থেকে প্রমাণিত, এখানে করোনাকালেও আর্থিক কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটেনি। ফলস্বরূপ জিএসটি আদায় ভালো।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এরাজ্যে গত এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা জিএসটি আদায় হয়েছে। এর মধ্যে শুধু নভেম্বরেই প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা আদায় হয়েছে। গত অর্থবর্ষের এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এরাজ্যে জিএসটি আদায় হয়েছিল প্রায় ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ এবছর প্রথম আট মাসে আদায় বেড়েছে প্রায় ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। প্রায় ৩৩ শতাংশ হারে আদায় বৃদ্ধি পেয়েছে।
অর্থদপ্তরের কর্তাদের কথায়, করোনা সংক্রমণ গত অর্থবর্ষের তুলনায় এবছর অনেক বেশি ছিল। এবার লকডাউন ঘোষণা না হলেও প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণে বেশ কড়াকড়ি ছিল। তার সামগ্রিক প্রভাব অর্থনীতিতে পড়লেও, জিএসটি আদায় প্রায় ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়া বেশ কঠিন ব্যাপার। এক্ষেত্রে রাজ্যের জিএসটি কর্তাব্যক্তি ও কর্মীদের প্রচেষ্টাকে গুরুত্ব দিতেই হয় বলে জানাচ্ছেন দপ্তরের কর্তারা।
মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা অমিত মিত্র বলেন, গত অর্থবর্ষের জিএসটি ক্ষতিপূরণ বাবদ পশ্চিমবঙ্গের প্রাপ্য টাকা থেকে এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রের তরফে ২০৮০ কোটি টাকা কম দেওয়া হয়েছে। এমনকী চলতি বছরে ৩ হাজার ৪৩৬ কোটি টাকা কেন্দ্র দেয়নি। এতে যে শুধু সংবিধানকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে, তা নয়, রাজ্যের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতাও করা হয়েছে৷