রাজবাড়ির দেওয়ালে দেখানো হবে কোচবিহারের ইতিহাস

এত দিন রাত হলেই অন্ধকারে হারিয়ে যেত রাজপ্রাসাদ। তাই রাতের নিঃসঙ্গ প্রাসাদকে জীবন্ত করতে তার দেওয়ালে আলো ও শব্দ প্রক্ষেপণের মাধ্যমে তথ্যচিত্র দেখানোর সিদ্ধান্ত নিল জেলা প্রশাসন।লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের এই তথ্যচিত্রে ফুটে উঠবে কোচবিহারের রাজ আমলের ইতিহাস। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই ইন্ডিয়া ট্যুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক সেরেছেন জেলা শাসক অরবিন্দ কুমার মিনা৷ জেলা প্রশাসনের তরফে ইন্ডিয়ান ট্যুরিজ়মকে বলা হয়েছে, প্রকল্পের আর্থিক ব্যায় সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য৷ প্রয়োজনে রাজ্য সরকার এই প্রজক্টে অর্থ অনুমোদন করবে৷

জেলা শাসকের কথায়, ‘রাতে রাজ‍বাড়ির দেওয়ালে লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের মাধ্যমে কোচবিহারের ইতিহাস সংক্রান্ত তথ্যচিত্র তুলে ধরা হলে, তা পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। খুব শ্রীঘ্র একটি দল আসবে কোচবিহার রাজপ্রাসাদ পরিদর্শনের জন্য৷’ জানা গিয়েছে, রাজস্থান বা দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন স্থাপত্যগুলিতে এ ধরনের তথ্যচিত্র তুলে ধরা হয়। এতেই সেই স্থাপত্যের আড়ালে লুকিয়ে থাকা পৌরাণিক ইতিহাস জানার সুযোগ হয় সাধারণ মানুষের। এ বার কোচবিহার রাজপ্রাসাদকে ঘিরেও এমনই ভাবনা প্রশাসনের৷ তারা জানিয়েছেন, প্রায় ৩০ থেকে ৪৫ মিনিটের তথ্যচিত্র দেখানো হতে পারে সেখানে৷ ফলে দিনের পাশাপাশি রাতেও কোচবিহার রাজবাড়ির ভিতরে ঢোকার সুযোগ মিল‍বে পর্যটকদের।

প্রকল্পটি রূপায়িত হলে রাতে আলাদা প্রবেশ মূল্যের বিনিময়ে রাজপ্রাসাদ চত্বরে বসে লাইট অ্যান্ড সাউন্ড দেখতে পাবেন পর্যটকরা। একটি সূত্র জানিয়েছে, আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া কোচবিহার রাজপ্রাসাদ দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে। রাজপ্রাসাদের কোনও প্রকল্প তৈরির ক্ষেত্রে ইন্ডিয়ান ট্যুরিজ়ম ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশনের অনুমোদন প্রয়োজন। চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে কর্পোরেশনের কর্তারা সমীক্ষা করতে আসবেন রাজপ্রাসাদে। তথ্যচিত্র দেখানোর জন্য প্রতি সন্ধ্যায় রাজপ্রাসাদে ১০০–র বেশি দর্শকাসনের ব্যবস্থা হতে চলেছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, রাজ ইতিহাস নিয়ে তথ্যচিত্র তুলে ধরতে গবেষক ও ইতিহাসবিদদের মতামত নেওয়া হবে৷ কোচবিহারের ইতিহাস থেকে জানা যায়, দিনহাটার ভেটাগুড়িতে প্রথম কোচবিহার রাজপ্রাসাদ তৈরি হয়েছিল। তবে বর্তমান রাজপ্রাসাদ রয়েছে শহরের কেশব রোডের পাশে। ১৮৮৭ সালে মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের আমলে সেই প্রাসাদ গড়ে ওঠে। বাংলার পর্যটন মানচিত্রে কোচবিহার রাজবাড়ির সব সময়েই একটা আলাদা স্থান রয়েছে। সারা বছর এখানে প্রচুর মানুষ আসেন। সেখানে তথ্যচিত্রের মাধ্যমে স্থানীয় ইতিহাস তুলে ধরলে তাঁরা রাজার শহরে বেড়াতে আসতে আরও আগ্রহ পাবেন৷