দেশকে চিরবিদায় জানালেন জেনারেল, সস্ত্রীক পঞ্চভূতে বিলীন হলেন বিপিন-মধুলিকা

জীবনের পথচলা একসঙ্গে শুরু করেছিলেন তারা, আবার মৃত্যুও কেড়ে নিলো তাদের একসাথে৷ চোখের জলে শেষ বিদায় ভারতের প্রথম চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াতকে৷ ১৭ গান স্যালুট বা তোপ ধ্বনিতে চিরবিদায় জানানো হল সস্ত্রীক সিডিএসকে৷ শুক্রবার বিকেলে দিল্লি ক্যান্টনমেন্টের ব্রার স্কোয়ার শ্মশানে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হল তাঁর৷ একই চিতায় শায়িত হলেন বিপিন ও মধুলিকা রাওয়াত৷

বুধবার দুপুরে সুলুর থেকে কুন্নুর যাওয়ার পথে নীলগিরির উপর ভেঙে পড়ে সিডিএস-এর চপার৷ মৃত্যু হয় সস্ত্রীক জেনারেল রাওয়াত সহ ১৩ জনের৷ বৃহস্পতিবার তামিলনাড়ু থেকে বিশেষ বিমানে দিল্লিতে নিয়ে আসা হয় তাঁদের মরদেহ৷ আজ বিকেলে সম্পন্ন হল শেষকৃত্য৷ জেনারেল রাওয়াতের শেষ যাত্রায় নেমেছিল মানুষের ঢল৷ কামরাজ মার্গের বাড়ি থেকে শুরু হয় সস্ত্রীক জেনারেল বিপিন রাওয়াতের শেষ যাত্রা৷ শববাহী শকটের সঙ্গে পতাকা হাতে রাস্তা দিয়ে ছুটে চলেন কয়েকশো মানুষ৷ রাস্তায় দু’ধারে ভিড় জমান শোকবিহ্বল দেশবাসী৷ চারিদিকে স্লোগান ওঠে ভারত মাতা কি জয়৷ জেনারেল রাওয়াতের শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন ৮০০ সেনাকর্তা ও সেনাকর্মী৷ শেষযাত্রায় অংশ নিয়েছিলেন তিন বাহিনীর প্রধান৷ শ্মশানে উপস্থিত ছিলেন তাঁর দুই কন্যা ও জামাতা৷ দুই কন্যাকেই দেখা যায় শেষকৃত্যে অংশ নিতে৷

অন্যদিকে সিডিএস-এর মৃত্যুতে ভেঙে যায় রাজনীতির সীমারখা৷ ভারতীয় সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ককে তাঁর বাসভবনে গিয়ে শ্রদ্ধা জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী, রাকেশ টিকায়েত, সাংসদ জহর সরকার, সুস্মিতা দেব, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল, উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি -সহ বিরোধী দলের নেতানেত্রীরা৷ উপস্থিত ছিলেন নেপাল, ভুটান এবং বাংলাদেশের সেনাকর্তারাও৷ 

বৃহস্পতিবার পালাম বিমানবন্দরে দেশের প্রথম সিডিএসকে শেষ শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। শুক্রবার শ্রদ্ধা জানান প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে শুরু করে বিরোধী একাধিক দলের শীর্ষ নেতা। বুধবারের চপার দুর্ঘটনায় একমাত্র জীবিত রয়েছে গ্রুপ ক্যাপ্টেন বরুণ সিং৷ গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি৷ শুক্রবার সকালে ৭ কামরাজ মার্গে নিয়ে যাওয়া হয় জেনারেল রাওয়াত ও তাঁর স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াতের পার্থিব দেহ৷ সকাল ১১টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সেখানেই তাঁদের দেহ শায়িত রাখা হয়৷ সেখানেই তাঁদের শেষ শ্রদ্ধা জানান সাধারণ মানুষ, আত্মীয় পরিজন এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা৷ সাড়ে ১২টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত জেনারেল রাওয়াতকে শেষ শ্রদ্ধা জানান সেনা কর্মী এবং সেনা আধিকারিকরা৷ দুপুর দুটোয় শুরু হয় সস্ত্রীক জেনারেল রাওয়াতের অন্তিম যাত্রা। বিকেল ৪টেয় ১৭ তোপ ধ্বনীতে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদার সঙ্গে সস্ত্রীক জেনারেল রাওয়াতের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।