রাজ্যে সরকার দারা ৩০ শতাংশ চা বাগানের জমি ভিন্ন কাজে ব্যবহারের অনুমোদন দিতেই বাড়ছে মালিক ,শ্রমিক বিরোধ, নিম্নতম মজুরী আদতে ১০ বছরের প্রতারণা, দাবী সিপিআইএমের। বৃহষ্পতিবার সেই বিরোধের আঁচ দেখা যায় ডুয়ার্সের রানিচেরা চা বাগানের বাসী লাইনে, মুখোমুখি বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পরে মালিক পক্ষ এবং ভূমিপুত্র আদিবাসী জনতা। বাগান কর্তৃপক্ষের দাবী ,যে জমি নিয়ে বিবাদ সেটি চা বাগানের অংশ, এবং যিনি সেই জমিতে চাষবাস করে আসার দাবী করছেন তিনি আদিবাসী হলেও আদতে চা বাগানের শ্রমিকই নন। যদিও জমিতে বসবাসকারী আদিবাসী পরিবারের সদস্য বিকাশ বারা, বলেন আগেও আমাদের চাষাবাদের জমিতে চা বাগান লাগিয়েছে,বলেছিল বাগানে কাজ দেবে, কিন্তু আজ পর্যন্ত কাজ দেয়নি, এখন এই টুকু জমিও নিতে চায়,বলছে চা গাছ লাগাবো, তাহলে আমরা কোথায় যাবো পরিবার নিয়ে। যদিও ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রাক্তণ তৃণমুল শ্রমিক সংগঠন আই এন টি টি ইউ সির জেলা সভাপতি তথা ডুয়ার্সের ভূমিপুত্র রাজেশ লাকরা একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, রাজ্যে সরকার ৩০ শতাংশ চা বাগানের জমি টি ট্যুরিজমের নামে বৃহৎ শিল্পপতি দের হাতে তুলে দেবার যে ঘোষণা করেছে, এই ঘটনা তারই প্রতিফলন।
বর্তমান রাজ্যে সরকার কার্যত ডুয়ার্সের আদিবাসী,গোর্খা,মুসলিম সহ অন্যান্য ভূমিপুত্র দের বাস্তুহারা করার চক্রান্ত শুরু করেছে,যেটা আমরা হতে দেবো না। অপরদিকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে চা বাগান কর্তৃপক্ষ টেলিফোন নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, চা বাগানের জমি,ঘিরে চাষাবাদ করার চেষ্টা করছিলেন একজন,বেস কয়েক বার ওনাকে অনুরোধ করার পরও সেই জমির দখল ছাড়তে না চাওয়ায় আজ আমরা জমিতে পোতা খুঁটি নিজেরাই তুলে ফেলে দিতে যাই। এছাড়াও টেলিফোন নিজেদের অবস্থা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বলেন, এই ভাবে যদি অশান্তি সৃষ্টি হতেই থাকে তাহলে চা শিল্প আরো সংকটে পড়বে, ইতিমধ্যেই বড় বড় চা উৎপাদন সংস্থা নিজেদের চা বাগান গুলোকে বিক্রির তালিকায় তুলে ধরেছে। যদিও ,চা বাগান কর্তৃপক্ষের এই দাবিকে ভিত্তিহীন বলে তৃণমুল কংগ্রেস দলের প্রাক্তন শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি রাজেশ লাকরা বলেন,
এই জমি ,চা বাগান মালিকের নয়, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের লিজ দেওয়া জমি, যার একমাত্র শর্ত টি বোর্ড অফ ইন্ডিয়ার অনুমোদন নিয়েজমিতে চা গাছ রোপণ করা,। আজ সেই জমিতে ২০০ বছর ধরে বসবাস করে আসা ভূমিপুত্র দের উচ্ছেদ করে রাজ্যে সরকার টি ট্যুরিজম এর নামে কার্যত ডুয়ার্সের আদিবাসী গোর্খা মুসলিম সহ অন্যান্য জনজাতীদের বাস্তুহারা করার পরিকল্পনা করছে। আমরা এর বিরুদ্ধে আগামীতে আরো জোরদার আন্দোলনের পথে নামতে বাধ্য হবো।অপরদিকে ঠিক একই দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছে রাজ্যের প্রাক্তন শাসক দল সিপিআইএম, চা বাগানের ৩০ শতাংশ জমি ভিন্ন কাজে ব্যবহারের অনুমোদন দেবার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সম্প্রতি জেলা শাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে দলের জেলা সম্পাদক পীযূষ মিশ্র বলেন, রাজ্যে সরকার চা বাগানের শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরী আজ পর্যন্ত চালু করেনি,২০১৫ সালে এই ঘোষণা করা হয়েছিল, আজ ১০ বছর ধরে এই রাজ্যে সরকার চা বাগান শ্রমিকদের প্রতারণা করেছে, এখন আবার ৩০ শতাংশ চা বাগানের জমি পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দিয়ে চা বাগান শ্রমিকদের ভিটে ছাড়া করবে। আমরা এর বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলনের পথে নেমেছি।