বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণের মাঝেই নির্বাচনের সিদ্ধান্ত

করোনা সংক্রমণকে রুখতে চলতি সপ্তাহের শুরুতেই রাজ্য জুড়ে জারি হয়েছে কড়া বিধিনিষেধ। কিন্তু তার জন্য আসন্ন পুরভোটে কোনও ফারাক পড়ছে না। কারণ, নির্ধারিত দিনেই পুরভোট হচ্ছে বলে স্পষ্ট করেছেন নির্বাচন কমিশন। রাজ্যের মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে বৈঠকের পর এমনটাই জানিয়ে দিল তারা। শিলিগুড়ি, আসানসোল, চন্দননগর এবং বিধাননগরের কোভিড পরিস্থিতি বুঝে কড়া নির্দেশ দেওয়া হবে জানান হয়েছে। অর্থাৎ কোভিড প্রোটোকল মেনেই হবে ভোট।

একদিকে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, অন্যদিকে, ওমিক্রন আতঙ্কও বাড়ছে। সেই প্রেক্ষিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু ভোটের বেলায় কেন এই বিধি থাকছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে কমিশনের এই প্রেক্ষিতে যুক্তি রয়েছে। তাদের বক্তব্য, কলকাতায় ভোট হচ্ছে না। সেখানে সবথেকে বেশি সংক্রমণ। যেখানে ভোট হচ্ছে, সেই চার জায়গায় আক্রান্তের সংখ্যা এবং হার তুলনায় অনেকটাই কম, তাই এই মুহূর্তে ভোট পিছোনোর প্রয়োজনীয়তা নেই বলেই মনে করছে তারা। তবে ভোট হলেও বিরাট ভাবে করোনা বিধি মানতে হবে সকলকে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

কমিশন বলছে, যে যে এলাকায় নির্বাচন, সেখানকার প্রতি মুহূর্তের কোভিড পরিস্থিতির রিপোর্ট স্বাস্থ্য দফতরের তরফে পাঠাতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। পরিস্থিতি বুঝে আরও কড়াকড়ি হতে পারে। এছাড়া জানান হয়েছে, প্রচারের ক্ষেত্রে কনভয়ে পাঁচটির বেশি গাড়ি রাখা যাবে না। বাড়ি বাড়ি প্রচারের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পাঁচজনকে অনুমতি দেওয়া হবে। ছোট ছোট জমায়েত করা যাবে। মঙ্গলবার আবার সংশ্লিষ্ট জেলাশাসক ও এসপিদের সঙ্গে আলোচনা করবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন বলে খবর।

ইতিমধ্যেই রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে কারণ বহু সংখ্যক চিকিৎসকরা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। কলকাতা মেডিক্যেল কলেজের রিজিওনাল ইন্সটিটিউট অফ অফথ্যালমোলজির ১২ জন চিকিৎসক। অন্যদিকে, নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী এবং রোগী-সহ মোট ৬১ জন কোভিড পজিটিভ হয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। চিত্তরঞ্জন শিশু সেবা সদন, আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজ থেকেই আগেই ভাইরাস আক্রান্তের খবর এসেছিল। বিগত ৩-৪ দিনেই রাজ্যের করোনা গ্রাফ হু হু করে বেড়েছে। তার মধ্যে এখন আবার ভোট হবে চার জায়গায়। স্বাভাবিকভাবে আতঙ্ক বৃদ্ধি হচ্ছে। বিরোধীরা এই নিয়ে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে রাজ্য সরকারকে। বলা হচ্ছে, এই সরকার শুধু মেলা, খেলা আর লুটের কাজ করছে।