কেন্দ্র সরকারের কাছে জবাব তলব নেতাজির মৃত্যু রহস্য নিয়ে

তিনি ছিলেন দেশবাসীর গর্ব৷ আজ এতো শতক বাদেও তার মৃত্যু রহস্যই রয়ে গেলো৷ নেতাজির মৃত্যু আজও আপামর দেশবাসীর কাছ এক রহস্য৷ তিনি বেঁচে রয়েছেন নাকি তাঁর মৃত্যু হয়েছে, এবার এই প্রশ্নের জবাব দিতে হবে কেন্দ্রকে৷ একটি জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে এমনই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট৷ এই নির্দেশের জেরে ফের ‘নেতাজি’ অস্বস্তি বাড়ল কেন্দ্রের৷ 

প্রসঙ্গত, নেতাজি সম্পর্কিত বেশ কিছু ফাইল প্রকাশ করেছে কেন্দ্র৷ কিন্তু তাঁর মৃত্যু বা জীবিত থাকা নিয়ে কোনও তথ্য সামনে আনা হয়নি৷ এবার সেই বিষয়টিই হাইকোর্টের সামনে স্পষ্ট করতে হবে মোদী সরকারকে৷ হলফনামা দিয়ে কেন্দ্রকে জানাতে হবে নেতাজি জীবিত না মৃত? এমনই নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের৷ শুধু তাই নয়, ভারতীয় টাকায় নেতাজির ছবি ব্যবহার করা যায় কিনা, সে বিষয়েও হলফনামা দিয়ে কেন্দ্রকে জানানোর নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডেভিশন বেঞ্চ৷ ৮ সপ্তাহের মধ্যে এই হলফনামা পেশ করতে হবে কেন্দ্রকে৷ 

কলকাতা হাইকোর্টে এই জনস্বার্থ মামলাটি করেন হরেন বাগচি৷ আদালতের কাছে তিনি তাঁর আবেদনের বলেন, ভারতীয় টাকায় গান্ধীজির ছবি রয়েছে৷ স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতাজি সুভাষচন্দ্রের অবদানও কম নয়৷ তাই ভারতীয় মুদ্রায় নেতাজির ছবিও থাকা উচিত৷ এই মামলার প্রেক্ষিতেই কেন্দ্রকে হলফনামা দিতে বলা হয়েছে৷ 

সত্যিই কি নেতাজি বিমান দুর্ঘটনায় প্রয়াত হয়েছিলেন? নাকি উনি এর পরেও জীবিত ছিলেন৷ কোনও কারণে কি উনি নিজের পরিচয় লুকিয়ে রেখেছিলেন? এই রহস্য আজও তাড়া করে বেড়ায় আপামর বাঙালি সহ ভারতবাসীকে৷ প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আর্কাইভে থাকা নেতাজি সম্পর্কিত যাবতীয় ‘গোপন’ ফাইল প্রকাশ করা হয় বলে দাবি৷ এই ফাইলগুলি ১৯৫৪ থেকে ১৯৭৪-এর মধ্যে৷ এই সময়সীমার মধ্যে নেতাজির অন্তর্ধান রহস্য উদঘাটনে মোট ১০টি তদন্ত হয়। এবং সব কটি তদন্তে একই দাবি করা হয়। রিপোর্টে বলা হয়, ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্ট তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনাতেই প্রাণ হারিয়েছিলেন দেশের মহান এই স্বাধীনতা সংগ্রামী৷ কিন্তু সেই দাবি খারিজ করে দেন একাধিক নেতাজি গবেষক। ২০০৫ সালে বিচারপতি মুখোপাধ্যায়ের তদন্ত কমিশন জানায়, ১৯৪৫-এর ১৮ অগাস্ট তাইহোকুর বিমান দুর্ঘটনার কোনও প্রমাণ মেলেনি। এমনকী ২০০৩ সালের মার্চ মাসে তাইপের মেয়র এক ভারতীয় সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছিলেন, ওই দিন তাইপে সিটি আর্কাইভে কোনও বিমান দুর্ঘটনার কথা উল্লেখই নেই। কেউ নেতাজির ডেথ সার্টিফিকেটও কোনও দিন পাননি৷