আবারো চর্চায় এল রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব মামলা

আবার সামনে উঠে এলো রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব মামলা। গত ২৮ মে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যালোচনা সভায় দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয় তৎকালীন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যদিও ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এর ক্ষয়ক্ষতি সামলানোর জন্য ব্যস্ত থাকায় তিনি প্রধানমন্ত্রীর সভায় যেতে পারেননি। এরপর বাংলার মুখ্যসচিব পদে না থেকে মেয়াদের শেষ দিনে অর্থাৎ ৩১ মে অবসর নিয়েছিলেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।

তারপর গত ১৬ জুন আলাপনের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু হয়। আলাপনের বিরুদ্ধে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে মামলা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের প্রিন্সিপাল বেঞ্চের (দিল্লি) নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ রাজ্যের অবসরপ্রাপ্ত মুখ্যসচিব। এই মামলায় বুধবারের শুনানিতে কেন্দ্রের অবস্থান জানতে চেয়েছে ‘ক্যাট’-এর বেঞ্চ। 

আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামলায় অস্বস্তিতে ক্যাট বা সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল। প্রাক্তন মুখ্যসচিবকে একদিন সময় না দিয়ে কেন মামলা ট্রান্সফার, প্রশ্ন হাইকোর্টের অবকাশকালিন বেঞ্চের। এই প্রেক্ষিতে প্রশ্ন করা হয়, এত আর্জেন্সি কি ট্রান্সফারের জন্য? মাত্র একদিন সময় দিতে পারা গেল না! ক্যাটের চেয়ারম্যান কী ভাবে জানলেন সব ডকুমেন্ট দিল্লিতেই থাকবে? প্রশ্ন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের। আদৌ সঠিক ছিল কিনা চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত তা ২ নভেম্বরের আগেই জানাবে হাইকোর্ট। কারণ ২ নভেম্বর আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে কর্মিবর্গ বিভাগ নোটিশ দিয়ে বক্তব্য জানাতে তলব করেছে।

মামলার প্রেক্ষিতে আলাপনের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী হিসেবে তাঁর যে সুযোগ সুবিধা পাওয়া কথা, তা তিনি পাচ্ছেন না। আর সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে তিনি জানান, একদিকে বাবা মারা যান, অন্যদিকে ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ের কারণে তিনি যেতে পারেননি কলাইকুণ্ডা, তাই তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। যদিও সেদিন তিনি দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করতে গিয়েছিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। এর পর ৭ অক্টোবর কলকাতা হাইকোর্টের বেঞ্চে মামলা দায়ের হয়।

কিন্তু ২১ অক্টোবর দিল্লিতে এই মামলা স্থানান্তর চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। তার পরের দিনই মামলা স্থানান্তরিত হয় দিল্লিতে। এত তড়িঘড়ি মামলা কলকাতা থেকে দিল্লিতে প্রিন্সিপাল বেঞ্চে মামলা সরিয়ে নিয়ে যাওয়াকেই চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেন আলাপন। উল্লেখ্য, এই মামলা কলকাতা থেকে দিল্লিতে সরানোর জন্য সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের প্রিন্সিপাল বেঞ্চে আবেদন করেছিল ডিপার্টমেন্ট অব পার্সোনেল অ্যান্ড ট্রেনিং। এই আবেদনের ভিত্তিতে গত ২২ অক্টোবরই কলকাতা থেকে মামলা স্থানান্তরের নির্দেশ দেয় সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের দিল্লি বেঞ্চ।