বড়ো অভিযোগ জেলেনস্কির তরফে

চলতি বছর শুরু দিকে শুরু হয়ে ধীরে ধীরে তিনমাসের বেশি সময় অতিক্রম করলো রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতি। একশোতম দিন পার করল সংঘাত। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের ২৪ তারিখ বিশেষ সামরিক অভিযানের নামে যে সংঘাতের সূত্রপাত হয়েছিল তা আজও চলছে। আর সেই যুদ্ধের একশোতম দিনে রুশ ফৌজের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। জেলেনস্কি বলেন ফেব্রুয়ারিতে সংঘর্ষ শুরুর পর থেকে এখনও পর্যন্ত ইউক্রেনের প্রায় ২ লক্ষ শিশুকে অপহরণ করেছে পুতিনের সেনা। তাদের জোর করে রাশিয়ায় তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্র এ খবর, গত কয়েক সপ্তাহে ধরে লাগাতার ইউক্রেনের ডনবাস এলাকায় কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে ইউক্রেনের সৈন্যরা। কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা লাগাতার হামলায় শুধুমাত্র ডনবাসেই কয়েক হাজার ইউক্রেনীয় সেনার মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। এমতাবস্থায় ফের কিছুটা অসহায় হয়ে পড়েছে জেলেনস্কি সরকার। আর তাই এই পরিস্থিতিতে ফের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য জেলেনস্কি আমেরিকার কাছ থেকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র চেয়েছিলেন যা প্রথমে ঘুরপথে ফিরিয়ে দিয়েছেন বাইডেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের তরফ থেকে জানানো হয়, রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডে হামলা চালানো যায় এমন কোন ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনের হাতে দেবে না আমেরিকা।

কিন্তু এই ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বুধবার ইউক্রেনের আবেদন মেনে নিয়ে বাইডেন বলেন, ‘আমরা সীমিত সংখ্যায় মাঝারি পাল্লার কিছু ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ এরপরেই ফের কিছুটা আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে জেলেনস্কি সরকার। আর তাই যুদ্ধের একশোতম দিনের সকালেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে শিশু অপহরণের মতো গুরুতর অভিযোগ এনেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি।

অন্যদিকে জানা যাচ্ছে এই মুহূর্তে ডনবাসের পরিস্থিতি ভয়াবহ। ইউক্রেন সরকারের দাবি প্রায় প্রতিদিনই ডনবাসে অন্ততপক্ষে একশো জন করে ইউক্রেনীয় সৈন্য নিহত হচ্ছেন পুতিন বাহিনীর হাতে। কিন্তু তারপরেও নিজেদের অবস্থান থেকে একচুলও সরতে রাজি নয় ইউক্রেন। উল্লেখ্য গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সেনা অভিযানের নামে যে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তা ঠিক আগেই ইউক্রেনের ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি করেন।

উল্লেখ্য ইউক্রেনের এই দুটি অঞ্চলই একত্রে ডনবাস নামে পরিচিত। আর তাই বর্তমানে এই ডনবাস অঞ্চল দখল করতেই মরিয়া রাশিয়ার সৈন্যরা। অনেকেই মনে করছেন একবার যদি এই ডনবাস পুতিন বাহিনীর দখলে চলে আসে তাহলে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করবেন রুশ প্রেসিডেন্ট। কিন্তু আপাতত রাশিয়াকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ ইউক্রেনীয় বাহিনী। আর তাই এই ডনবাসকে কেন্দ্র করে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে চলছে জোরালো সংঘর্ষ।