সংক্ৰমণ মুক্ত হয়েও থেকে যাচ্ছে লক্ষ্যণ

বিগত দু বছরের বেশি সময় করোনা সংক্রমণের তান্ডব চলছে দেশে। এই সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছে কয়েক লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষ। সংক্রমণের দু’বছর পরেও করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদের শরীরে থাকছে করোনার যে কোনও একটি উপসর্গ, করোনা নিয়ে প্রকাশিত সাম্প্রতিক রিপোর্টে এমনটাই জানাচ্ছে বিশেষজ্ঞ মহল। দেশ তথা বিশ্বে এই মারন ভাইরাস থাবা বসিয়েছে আজ থেকে প্রায় আড়াই বছর আগে। ইতিমধ্যেই বিশ্বের কয়েক কোটি মানুষ এই সংক্রামক ভাইরাসের শিকার হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অনেককেই হার মানতে হয়েছে জীবন যুদ্ধে, আবার অনেকে মনের জোরে এবং চিকিৎসকদের আপ্রাণ চেষ্টায় কাটিয়ে উঠেছে এই মারণ বিপদ। কিন্তু ল্যানসেটের সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে, আদতে খালি চোখে আমরা যেভাবে করোনাকে দেখতে পাচ্ছি এই ভাইরাস তার থেকেও কয়েক গুণ ভয়ঙ্কর। এই বিখ্যাত মেডিকেল জার্নালই দাবি করা হয়েছে সংক্রমনের দু বছর পরেও যাদের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছিল করোনা ভাইরাস তাদের শরীরে কোনও না কোনও একটি উপসর্গ রয়েই যাচ্ছে।

সম্প্রতি প্রকাশিত ল্যানসেটের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ও তারপর করোনা থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসা লোকদের অন্তত অর্ধেকের বেশি শরীরে করোনার একটি না একটি উপসর্গ এখনও বিদ্যমান। ওই জার্নালে লেখা হয়েছে, ‘রোগের প্রাথমিক তীব্রতা নির্বিশেষে করোনা থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছে এবং বেশিরভাগই দুই বছরের মধ্যে তাদের নিজের নিজের কাজে ফিরে গিয়েছেন। তবে লক্ষণীয় যে করোনার কবল থেকে বেঁচে যাওয়া লোকদের দুই বছরের মধ্যে বিভিন্ন অসুস্থতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। এমনকি তাদের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ ব্যক্তিদের শরীরে এখনও করোনার যে কোনও একটি উপসর্গ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

ওই জার্নালে আরও বলা হয়েছে ভবিষ্যতে গবেষণার মাধ্যমে দীর্ঘ কোভিডের এই ফলাফল সম্পর্কে আরও ভালোভাবে খোঁজ নেওয়া উচিত এবং দীর্ঘকালীন করোনার ঝুঁকি কমাতে কার্যকরী কৌশল তৈরি করা উচিত। এ ব্যাপারে ইংল্যান্ডের একটি সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে করোনা সংক্রমিত হাসপাতলে ভর্তি হওয়া চারজনের মধ্যে একজন রোগী এক বছর পর পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠছেন। এক্ষেত্রে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পর দীর্ঘ সময় ধরে তাদের যে সমস্যাগুলির মুখোমুখি হতে হচ্ছে তা হল ক্লান্তি, পেশিতে ব্যথা, শারীরিক দুর্বলতা, অনিদ্রা এবং কখনও কখনও শ্বাসকষ্ট। ইংল্যান্ডের ওই গবেষণায় আরও বলা হয়েছে যে করোনাজয়ীদের মানসিক স্বাস্থ্য, তাদের ব্যায়াম করার ক্ষমতা, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের দুর্বলতা এবং জীবনযাত্রার মান করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আগের থেকে অনেকটাই খারাপ হয়েছে।