জ্বালানি তেলের দামে কর ছাড় প্রসঙ্গে এবার নরেন্দ্র মোদিকে পাল্টা আক্রমণ করলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ।এদিন তিনি বলেন, মোদী সরকার রাজ্যের বকেয়া টাকা দিয়ে দিলে আগামী পাঁচ বছরের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারও পেট্রোল – ডিজেলের উপর সমস্ত কর মক্ত করে দেবে। পাশাপাশি তিনি আরও জানান, ৩০ এপ্রিল পেট্রোল – ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি একাধিক ইস্যুতে প্রতিবাদে নামবে তৃণমূল।
এদিকে, সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জ্বালানি তেলের কর ছাড় প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের তুলোধোনা করেন। তিনি বলেন,“কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারের তুলনায় পেট্রোলের উপর ২৫ শতাংশ বেশি কর নিচ্ছি। ২০১৩ সাল থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত মোদি সরকার ১৭ লাখ ৩১ হাজার ২৪২ কোটি টাকা পেট্রোল ডিজেল থেকে আয় করেছে।” মমতার অভিযোগ, কেন্দ্রের থেকে প্রায় ৯৮ হাজার কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। কেন্দ্রকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, বকেয়া টাকার অর্ধেক মিটিয়ে দিলেই তিনি পরের দিন তিন হাজার কোটি টাকা দিয়ে দিবেন।
প্রসঙ্গত, বুধবার দুপুরে করোনার চতুর্থ ঢেউ কীভাবে রোখা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করতে এদিন সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও৷ করোনার চতুর্থ ঢেউ আটকাতে কেন্দ্র- রাজ্যের সমন্বয়ের উপরে জোর দেন মোদি৷ এই প্রসঙ্গে কথা বলতে বলতেই পেট্রোল- ডিজেলের চড়া দামের বিষয়টি উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী৷ নরেন্দ্র মোদি অভিযোগ করেন, বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়ছে দেখে গত নভেম্বর মাসেই পেট্রোল- ডিজেলের উপরে রাজস্ব শুল্ক কমিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার৷ রাজ্যগুলিকেও নিজেদের প্রাপ্য কর কমানোর অনুরোধ করেছিল তারা৷
মোদির অভিযোগ, কিছু রাজ্য কেন্দ্রের অনুরোধে সাড়া দিলেও অনেক রাজ্য সেই পথে হাঁটেনি৷ ফলে সেই রাজ্যগুলির মানুষকে বেশি দামে পেট্রোল- ডিজেল কিনতে হচ্ছে৷ প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, কর না কমিয়ে আসলে নিজেদের রাজ্যের বাসিন্দাদের সঙ্গে অন্যায় করছে এই রাজ্যগুলি৷ পেট্রোলের দামের তুলনা টেনে মোদি আরও বলেন, ‘মুম্বাইতে পেট্রোল বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়, অথচ মুম্বাইয়ের কাছেই দামান-দিউতে সেই পেট্রোল বিক্রি হচ্ছে ১০২ টাকায়৷ কলকাতায় পেট্রোলের দাম ১১৫ টাকার বেশি, লখনউ-গৌহাটিতে তা বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকায়৷ উত্তরাখণ্ডের মতো ছোট রাজ্যের দেহরাদুনেও পেট্রোল ১০৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে৷ তাই আপনারা যারা এখনও কর কমাননি, তাঁদের কাছে অনুরোধ, এই ছ’ মাসে আপনারা অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় করেছেন৷ এবার অন্তত দেশের স্বার্থে কর কমিয়ে সাধারণ মানুষকে তার সুবিধে দিন৷ ‘ রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্যই যে জ্বালানির দাম বেড়েছে, তাও জানাতে ভোলেননি প্রধানমন্ত্রী৷