বিগত দু বছরের বেশি সময় ধরে করোনা মুক্ত ছিল উত্তর কোরিয়া। কিন্তু চলতি বছরে ধীরে ধীরে আক্রান্ত হইতে শুরু করে উত্তর কোরিয়ার মানুষ জন। এই পরিস্থিতিতে উত্তর কোরিয়ার বিপদের দিনে পাশে দাঁড়াল প্রতিবেশী। প্রতিবেশীর তরে প্রতিবেশী মোরা। করোনা মহামারীতে জর্জরিত উত্তর কোরিয়া। লাফিয়ে লাফিয়ে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে যাবতীয় শত্রুতা ভুলে পাশে দাঁড়াল দক্ষিণ কোরিয়া। কিম জং উনের দেশের দিকে মানবিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল দক্ষিণ কোরিয়া।
এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল জানিয়েছেন, করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে পিয়ংইংয়কে চিকিৎসার সরঞ্জাম থেক ওষুধ দিতে প্রস্তুত। তবে কিম প্রশাসন এই বিষয়ে এখনও কোনও বিবৃতি প্রকাশ করেনি।
দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সম্পর্ক কখনও ভালো ছিল না। তবে মুন জায়ে ইন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি হলেও, পরে ফের তা আগের অবস্থায় চলে যায়। পিয়ংইয়ংয়ের ক্রমাগত পরমাণু গবেষণা, ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সমালোচনা করে এসেছে দক্ষিণ কোরিয়া। নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। কিম জং উনের একরোখা মনোভাবের জেরে বিশ্বে বিচ্ছিন্ন দ্বীপে পরিণত হয়েছে উত্তর কোরিয়া। রাষ্ট্রসংঘ, আমেরিকা ও ইউরোপের একাধিক নিষেধাজ্ঞার জেরে দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা বিপর্যস্ত।
অন্যদিকে, গত দুই বছর ধরে বিশ্বে করোনা মহামারী দেখা দিয়েছে। তবে উত্তর কোরিয়ায় করোনা সংক্রমণ নিয়ে বিশেষ কোনও খবর পাওয়া যায়নি। তবে মে মাস থেকে উত্তর কোরিয়ার করোনা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি হচ্ছে। উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদ মাধ্যম KCNA দেশের করোনা পরিচিতি প্রসঙ্গে জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহ ধরে এই দেশের মানুষ অজানা এক জ্বরের কবলে পড়েছে। ইতিমধ্যেই রবিবার সকালে এই জ্বরের প্রকোপে আরও ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মাত্র ৩ দিনে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪২।
অন্যদিকে, জানা যাচ্ছে সংক্রমনের খবর প্রকাশ্যে আসার মাত্র তিন দিনের মধ্যে উত্তর কোরিয়ায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ লক্ষ ২০ হাজার ৬২০ জন। তাদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অন্ততপক্ষে ৩ লক্ষ ২৪ হাজার ৫৫০ জন। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে রাতারাতি কার্যত কোণঠাসা দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা।
উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী করোনার সংক্রমণ রুখতে ইতিমধ্যেই উত্তর কোরিয়ার রাজধানীসহ, একাধিক গুরুত্বপূর্ণ শহর, প্রদেশ এবং শহরতলীতে জারি হয়েছে লকডাউন। বন্ধ হয়েছে দেশের প্রায় অধিকাংশ কলকারখানা এবং অফিস-কাছারি। দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশজুড়ে জরুরী ভিত্তিতে চালু হয়েছে কোয়ারেন্টাইন পরিষেবা।