প্রকাশ্যে এলো দেশের সেনাদের নিয়ে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। বাড়ছে তাদের আত্মহত্যার সংখ্যা। শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা সমস্ত কিছু উপেক্ষা করে সারাদিন ধরে হাড় ভাঙা পরিশ্রম, সঙ্গে মানসিক চাপ, বাড়ি ফিরতে না পারার দুঃখ, অপ্রতুল ছুটি এবং সর্বোপরি উর্ধ্বতন আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারার আফসোস সবে মিলে ভারতের তিন সশস্ত্র বাহিনীতে প্রায় প্রত্যেক বছরই লাফিয়ে বাড়ছে জওয়ানদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা।
জানা যাচ্ছে কত ৫ বছরে ভারতের তিন বাহিনীর নিচু তলার জওয়ানদের মধ্যে আত্মঘাতী হওয়ার প্রবণতা উদ্বেগ জনকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজ্যসভায় এমন চমকপ্রদ তথ্যই সামনে এনেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী অজয় ভাট। তাঁর দেওয়া তথ্য অনুসারে, গত পাঁচ বছরে স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীর ৮১৯ জওয়ান আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।
এদিন রাজ্যসভায় প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী জানান, কর্মরত জওয়ানদের মানসিক চাপ কমাতে ২০০৯ সাল থেকে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তাঁদের মানসিক চাপ কমাতে যোগ ব্যায়াম কিংবা ধ্যানের আলাদা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাওকরা হয়েছে। কিন্তু এই সমস্ত টোটকা কোনও কাজেই আসছে না, যত দিন যাচ্ছে তত বছর বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে আত্মঘাতী জওয়ানদের সংখ্যা।
সেনা আধিকারিকদের একাংশের দাবি, মানসিক চাপ, কর্মক্ষেত্রে নিদারুণ অবস্থা, বাড়ি যাওয়ার জন্য অপ্রতুল ছুটি ও ঊর্ধ্বতন অফিসারদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া— এই সব কারণই আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ার পিছনে অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজ্যসভায় প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী যে রিপোর্ট পেশ করেছেন তাতে জানানো হয়েছে, গত পাঁচ বছরে আত্মঘাতী হয়েছেন তিন বাহিনীর ৮১৯ জওয়ান। সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে স্থল সেনাবাহিনীতে। স্থল বাহিনীর ৬৪২ জন জওয়ান আত্মঘাতী হয়েছেন এই পাঁচ বছরে। তার পরেই রয়েছে বায়ু সেনা।
দেশের আকাশ পথ পাহারার কাজে নিয়োজিত বায়ুসেনার ১৪৮ জন এবং নৌবাহিনীর ২৯ জওয়ান আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। সেনা জওয়ানদের আত্মহত্যা রুখতে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন। তাঁর কথায়, ‘সেনা ও নৌবাহিনীতে বিশেষ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। মানসিক চাপ কমাতে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। নিয়মিত কাউন্সেলিং করানো হচ্ছে।’ কিন্তু তাতে যে খুব একটা কিছু লাভ হচ্ছে না এই রিপোর্টই তার জলজ্যান্ত প্রমাণ।