রাজ্যের সব কটি দুর্নীতির মামলার মধ্যে অন্যতম মামলা হলো গরু পাচার কাণ্ড। এই মামলা একের পর এক তলবকে এড়িয়ে গেছেন তিনি৷ আবার গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে ফের তলব সিবিআই-এর৷ বোলপুরের বাড়িতে নোটিস কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার৷
গরুপাচার মামলায় এই নিয়ে দশমবার তলব করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই৷ বুধবার সকাল ১১টায় কলকাতার নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে তাঁকে হাজিরা দেওয়ার ‘নির্দেশ’ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, আজও সিবিআই দফতরে যাচ্ছেন না বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি৷
অসুস্থতার কারণ দর্শিয়েই দশমবার হাজিরা এড়ালেন তিনি৷ মঙ্গলবার টোটো ধরে তাঁর বোলপুরের বাড়িতে পৌঁছয় সিবিআই৷ অন্যদিকে, পৌঁছয় বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সদের দল৷ কেষ্টর শরীর পরীক্ষা করে দেখেন চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী৷
তাঁর বিস্ফোরক দাবি, তিনি প্রেসক্রিপশনে নয়, স্রেফ সাদা কাগজে অনুব্রতকে বিশ্রামের পরামর্শ লিখে দিয়েছেন৷ আর সেটাও আবার ‘রোগী’ অনুব্রতের নির্দেশেই! অনুব্রত বিধায়ক বা সাংসদ নন। কোনও সরকারি প্রতিনিধিও নন। তা সত্ত্বেও কেন তাঁর বাড়িতে সরকারি মেডিক্যাল দল গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা।
বিতর্কের মাঝেই বোমা ফাটিয়ে চিকিৎসক চন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘আমি সরকারি কর্মচারী। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মানতে বাধ্য।’’ তিনি আরও জানান, হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মুর্মুর নির্দেশ মেনেই অনুব্রতর বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি৷
তাঁর কথায়, ‘‘আমাকে সুপার যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, সেটাই করেছি।’’ এমনকি, তিনি অনুব্রতকে যে ‘বেড রেস্ট’ লিখে দিয়েছেন, সেটা প্রেসক্রিপশনে উল্লেখ করেননি। লিখেছেন সাদা কাগজে৷ তবে কেষ্টর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে চন্দ্রনাথের মনে হয়েছে তাঁর বিশ্রামের প্রয়োজন। চিকিৎসকের কথায়, ‘‘আমি ডঃ বুদ্ধদেব মুর্মুকে বলেছিলাম ওঁর নামে কোনও কাগজ যেন হাসপাতাল থেকে ইস্যু করে দেওয়া হয়। উনি বলেছিলেন, কোনও কাগজের প্রয়োজন নেই। কোনও প্যাড নয়, সাদা কাগজেই লিখে দিন।’’
সেই মতোই অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ি থেকেই একটি সাদা কাগজ চেয়ে দাওয়াই লিখে দেন তিনি। চন্দ্রনাথের কথায়, ‘‘ওঁর ফিশচুলার সমস্যা রয়েছে। অসম্ভব মানসিক চাপের মধ্যেও রয়েছেন।’’ তিনি এ-ও জানান, অনুব্রতই তাঁকে অনুরোধ করেন, ‘‘আমাকে বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিন।’’