রাজ আমলের ঐতিহ্য, ভিন্ন রীতির সরস্বতী পুজো কোচবিহারে

কোচ রাজাদের ঐতিহ্যে মোড়া জেলা শহর কোচবিহার সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তেমনই কোচবিহার জেলায় রাজ আমলের বিভিন্ন প্রাচীন পুজোর রীতি-নীতি আজও প্রচলিত। এই পুজোগুলি অন্যান্য সকল পুজোর থেকে একেবারেই আলাদা। একটা সময় রাজ আমলে কোচবিহার রাজবাড়িতে এই পুজোগুলি আয়োজন করা হত। পরবর্তী সময়ে এই পুজোগুলি মদনমোহনের মন্দিরে স্থানান্তরিত করা হয়। ঠিক এমনই একটি রাজ আমলের পুজো মহা সরস্বতী পুজো। এই পুজোর নিয়ম-নীতি সাধারণ সরস্বতী পুজোর থেকে একেবারেই আলাদা।

মদনমোহন মন্দিরের পুরোহিত শিবকুমার চক্রবর্তী বলেন, “কোচ রাজাদের সেই আমল নেই। তবে বর্তমানেও রাজ আমলের সমস্ত প্রাচীন রীতি-নীতি মেনে মদনবাড়িতে হয়ে আসছে এই পুজো। ইতিমধ্যেই মহা সরস্বতী পুজোর প্রস্তুতি চলছে মদনমোহন মন্দিরে। শ্রী পঞ্চমীর শুভ তিথিতে সরস্বতী পুজো আয়োজন করা হয় এখানে। মদনমোহন মন্দিরের কাঠামিয়া মন্দিরে এই দেবীর আরাধনা করা হয়। তিনি আরও জানান, “এই মহা সরস্বতী দেবীর আরাধনা করার পাশাপাশি একটি বিশেষ পুজোও হয়ে থাকে এখানে। এই পুজোতে সমস্ত ঋতুদের পুজো করা হয়। রাজ আমলের জমিদার এবং রাজাদের বাড়িতে এই পুজোর আয়োজন করা হত। বর্তমান সময়ে এই পুজোর সমস্ত দায়িত্বভার পালন করে কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড।”

মন্দিরের পর্যটক জয়শঙ্কর দে জানান, “রাজ আমলে প্রাচীন এই মন্দিরকে বাদ রেখে কোচবিহার জেলাকে চিন্তা করা যায় না। এই মদনমোহন বাড়ির কাঠামিয়া মন্দিরে মহা সরস্বতী দেবীর পুজো করা হয়। এই পুজোকে কেন্দ্র করে প্রচুর মানুষ মন্দিরে ভিড় জমান সরস্বতী পুজোর দিনে।” ইতিমধ্যেই রাজ আমলের পরম্পরা মেনে দেবীর মূর্তির নির্মাণ কাজ অনেকটা সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। পুজোর আগের দিন মূর্তি নির্মাণ সম্পন্ন হয়ে যাবে। তবে এই পুজোর দিন বহু মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে এই মন্দিরে আসেন পুজো দেখতে ও পুজো দিতে। অনেকে তো এই মন্দিরেই বাচ্চাদের হাতে খড়ির আয়োজন করে থাকেন।