সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর পদে বসেছেন রনিল বিক্রমসিংহ। এই পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কার অন্তর্বর্তীকালীন তথা অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি থাকাকালীনই সেনা আধিকারিকদের বিক্ষোভ রুখতে যে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।
আর এখন তো ভোটে জিতে পাকাপাকিভাবে তিনিই রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। আর তাই নতুন প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহের শপথ নেওয়ার পর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই রাজধানীর বিক্ষোভস্থলগুলিতে অভিযান চালাল লঙ্কাণ সেনা। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সেনার দ্বন্দ্বে রণক্ষেত্রের রূপ নিল শ্রীলঙ্কার রাজপথ।
উল্লেখ্য, রনিল বিক্রমসিংহে এই দেশের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় কার্যত নাখুশ দেশের সাধারণ মানুষ। এর আগেই বিক্ষোভকারীরা প্রাক্তন শ্রীলঙ্কান প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগের পাশাপাশি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহের পদত্যাগেরও দাবি জানিয়েছিল।
তাদের দাবি ছিল, নতুন কেউ এসে দেশের শাসনভার গ্রহণ করুক। কিন্তু সে গুড়ে বালি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতে এখন রনিলই পাকাপাকিভাবে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট। আর তাই বিক্ষোভকারীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা সরকার বিরোধী এই বিক্ষোভ জারি রাখবে।
এমতাবস্তায় বিক্ষোভকারীদের দখলে থাকা এলাকাটি খালি করতে কয়েক ঘণ্টা রাজধানী কলম্বোতে অভিযান চালায় লঙ্কান সেনা। টানা কয়েক ঘণ্টার চেষ্টার পরে শেষমেষ প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে বিক্ষুব্ধ জনতাদের সরাতে সফল হন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। তবে এই ধরপাকড়ে প্রায় শতাধিক বিক্ষোভকারী আটক হয়েছে বলে খবর।
এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গত এপ্রিল মাস থেকে কলম্বোর বিভিন্ন জায়গায় যে অস্থায়ী ক্যাম্পগুলি গড়ে তুলেছিল বিক্ষোভকারীরা সেগুলো মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যেই অপসারণ করা হয়েছে। ওই ক্যাম্পগুলিতেই বিক্ষোভকারীদের জন্য যাবতীয় রসদ যেমন খাবার, বিশ্রাম নেওয়ার জায়গার মতো শয্যা সবকিছু মজুদ থাকত।
কিন্তু এদিন সকালে প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের কাছাকাছি সমস্ত অস্থায়ী ক্যাম্প সেনা আধিকারিকরা তুলে দেন। পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়েছে শতাধিক বিক্ষোভকারীকে।
জানা যাচ্ছে দেশের নতুন প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহে শপথ নেওয়ার পরপরই বিক্ষোভকারীরা ঘোষণা করেছিলেন যে তারা বিকেলের মধ্যে এলাকাটি ফাঁকা করার পরিকল্পনা করছেন। কিন্তু তা সত্বেও এই অভিযান চালিয়েছে লঙ্কান সেনা। ফলে প্রশ্ন উঠছে বিক্ষোভ থেকে সরে আসার পরেও কেন শুক্রবার সাত সকালে অভিযানে নামল এই দ্বীপ রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।