গোষ্ঠীকোন্দলও নাকি শুভ মহরৎ দেখে শুরু হবে কোচবিহারে! তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সহ সভাপতি তথা জন্মলগ্ন থেকে টানা ২২ বছর জেলা সভাপতির দায়িত্বে থাকা রবীন্দ্রনাথ ঘোষের রবিবারের এক কর্মসুচী নিয়ে সামাজিক মাধ্যম এখন উত্তাল। এদিন রবিবাবু কোচবিহার জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধক্ষ্য মীর হুমায়ুন কবীরের বাড়িতে ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে আসার পুর্ব পরিকল্পিত কর্মসুচী নিয়েছেন। সেই কর্মসুচীতে নিজের অনুগামীদেরও বাড়িতে আমন্ত্রণ করেছেন হুমায়ুনবাবু। সেই আমন্ত্রণের কর্মসুচীই নাকি গোষ্ঠী কোন্দলের শুভ মহরৎ দিনহাটায়।
এই নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে সোচ্চার হয়েছে রবি বিরোধী গোষ্ঠী। আর এই কোন্দলে রীতিমত বৈঠক হয়েছে দিনহাটায়। কোচবিহারে জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি পার্থ প্রতীম রায়, দিনহাটার সাবেক বিধায়ক উদয়ন গুহের নেতৃত্বে দিনহাটা-২ ব্লকে বিশৃঙ্খলতা আটকানোর জন্য বৈঠক করা হয়। দলের দুই গোষ্ঠীর নেতাদের পরস্পরের বিরুদ্ধে সামাজিক মাধ্যমে কাদা ছোঁড়াছুঁড়িতে বিতৃষ্ণ সাধারন মানুষজনের অনেকেই। কোন্দল রুখতে এখন দলনেত্রী কি ব্যবস্থা নেয় সেটাই দেখার।
দিনহাটা বিধানসভায় স্বল্প ব্যবধানে এবারের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হন তৎকালীন সাংসদ ও বর্তমানের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামানিক। তিনি বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ায় এই কেন্দ্রে উপনির্বাচন আবশ্যিক হয়ে উঠেছে। এবারের নির্বাচনে তৃণমুলের হয়ে ভোটে দাড়াতে নাকি মরিয়া পরাজিত উদয়ন গুহ। স্বল্প ব্যবধানের ঘুচিয়ে বিপুল ভোটে জয়ী হওয়ার জন্য যাবতীয় পরিকল্পনা নাকি তিনি ইতিমধ্যেই করেছেন। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস এখনো অবধি দিনহাটা সহ কোন উপ নির্বাচনেরই প্রার্থী ঘোষনা করেনি। আর সেখানেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে অনেকেই।
রাজনৈতিক মহলে কানাঘুষো, নাটাবাড়িতে পরাজিত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে দিনহাটা উপনির্বাচনে দলের প্রার্থী করতে চাইছে দলের একাংশ। এই কেন্দ্রে রবিবাবুকে যেন দল প্রার্থী করে সে নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে দরবারও করছেন তারা। আর নিজের জয় নিশ্চিত করার জন্য নাকি দিনহাটায় কোমর বেঁধে নিজের অনুগামীদের সংগঠিত করছেন রবিবাবু। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, গত নির্বাচনে যতই বিধানসভা নির্বাচনে কোচবিহার জেলায় বিজেপি ভালো ফল করুক না কেন, দিনহাটা উপনির্বাচনে সেটা করা কার্যত অসম্ভব।
আর দিনহাটা কেন্দ্রে জয়ী হলে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী করা হতে পারে জয়ী হেভিওয়েট বিধায়ককে। অতএব উপনির্বাচনে নিজেদের ভাগ্যে যাতে শিঁকে ছিড়ে তাঁর জন্য আপ্রাণ চেষ্টায় রয়েছেন তৃণমুলের একাধিক নেতা। সেই লড়াইতে নাকি একে অপরকে জমি ছাড়তে রাজী নন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও উদয়ন গুহও। তাই আপাত এক ইদের শুভেচ্ছা জানানোর কর্মসুচী নিয়েও উত্তাল সামাজিক মাধ্যম ও রাজনৈতিকমহল। রবিবাবুর দিনহাটায় ঘন ঘন আসা যাওয়াকে বাঁকা চোখে দেখছে উদয়ন অনুগামীরা। আর ইদের শুভেচ্ছা জানাতে রাজ্য সহঃ সভাপতি হয়েও দিনহাটায় দলের কর্মীর বাড়িতে আসতে কেন পারবেননা, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে রবি অনুগামীরা।
এসব নিয়েই আদি বনাম নব্য তৃণমুলের দলীয় কোন্দল ক্রমশঃ পরিষ্কার হয়ে উঠছে সীমান্তবর্তী দিনহাটায়।