বৃহস্পতিবারই চার দিনের ঠাষা কর্মসূচি নিয়ে দিল্লি পৌঁছান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরই দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠককে কেন্দ্র করে জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য তথা কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে।
তৃণমূলের দাবি রাজ্যের দাবিদাওয়া নিয়েই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন মমতা। উল্টোদিকে বিরোধীদের কটাক্ষ ইডি-সিবিআই যেভাবে পশ্চিমবঙ্গে তদন্ত শুরু করেছে বিভিন্ন ইস্যুতে, তাতে কেন্দ্রের সঙ্গে সেটিং করার জন্যই মমতা-মোদির এই বৈঠক।
মমতার দিল্লি সফরের আগেই রাজধানীতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিজেপি সভাপতির সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর সোমবার মমতা কলকাতার ফেরার পর ফের একবার দিল্লি সফরে যাচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী। যা নিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক জল্পনা শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চারদিনের দিল্লি সফরে গিয়েছেন। আর মমতা রাজ্যে ফেরার পরই দিল্লি সফরে যেতে পারেন শুভেন্দু। বিজেপি সূত্রে খবর, আগামী ১১ আগস্ট দিল্লি যেতে পারেন বিরোধী দলনেতা।
জানা গিয়েছে, ওই সময় উপরাষ্ট্রপতি পদে শপথ গ্রহণ রয়েছে৷ সংখ্যাতত্ত্ব বলছে, পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল ধনকড়ের উপরাষ্ট্রপতি হওয়া শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা৷ আর বরাবরই ধনকড়ের সঙ্গে শুভেন্দুর অত্যন্ত সুসম্পর্ক রয়েছে।
তাই ধনকড়ের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে থাকার জন্যই শুভেন্দু দিল্লি যেতে পারেন বলে খবর। তবে শুভেন্দু দিল্লি সফরে গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেন কিনা সেদিকেও নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের।
সদ্য দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে বৈঠক করেছেন শুভেন্দু। তাই ফের দিল্লি সফরে গিয়ে শুভেন্দু কাদের সঙ্গে বৈঠক করেন, রাজ্যের বিরুদ্ধে কী কী ইস্যু রাজধানীতে তুলে ধরেন, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে ওয়াকিবহাল মহলের।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক নিয়েও বিজেপির অন্দরে শুরু হয়ে গিয়েছে চাপানউতোর৷ রাজ্য বিজেপি চায় তৃণমূলের উপর চাপ আরও বাড়ান দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক হলে সে বিষয়টি লঘু হয়ে যায় বলেই রাজ্য বিজেপি মনে করে। কিন্তু, বহুদলীয় গণতন্ত্রে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক খুবই সাধারণ একটি বিষয়৷ প্রশাসনিক স্তরে বৈঠক কি আদৌও রাজনীতির ময়দানে প্রভাব ফেলে?
এই নিয়েই এখন চলছে নানান গুঞ্জন৷ ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের ধারণা, ফের দিল্লি সফরে গিয়ে এই সমস্ত বিষয়গুলি নতুন করে তুলে ধরবেন শুভেন্দু অধিকারী। তাতে পশ্চিমবঙ্গের উপর কেন্দ্রের আরও চাপ তৈরি হবে, এই বাতাবরণ অত্যন্ত স্পষ্ট হবে বলে মনে করেন বিরোধী দলনেতা।
রাজ্য রাজনীতির সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট বলছে তৃণমূল বিরোধিতায় মাঠে-ময়দানে সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে বিরোধী দলনেতাকে। সেখানে অনেকটাই নিষ্প্রভ রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। স্বাভাবিকভাবেই কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন শুভেন্দুকে।
তাই এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চান নন্দীগ্রামের বিধায়ক। সেই লক্ষ্যেই ফের দিল্লি সফরে গিয়ে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করতে পারেন শুভেন্দু, এমনটাই শোনা যাচ্ছে। যদিও তাঁর সম্ভাব্য দিল্লি সফর নিয়ে শুভেন্দুর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।