ঐতিহ্যবাহী রাসমেলার অন্যতম আকর্ষণ ভেটাগুরীর জিলিপি

খাদ্য রসিক বাঙালীর কোচবিহারের ঐতিহ্যবাহী রাস মেলায় অন্যতম আকর্ষণ ভেটাগুড়ির জিলিপি। তাদের তৈরি জিলিপি ছাড়াও বাবুরহাট রাজারহাট এমনকি দেওয়ানহাট থেকেও ব্যবসায়ীরা রাস মেলায় জিলিপি বিক্রি করেন বহু বছর থেকে। তারা জিলিপি তৈরি করতে যেসব উপকরণ ব্যবহার করেন, অন্যান্য দোকানেরাও একই উপকরণ ব্যবহার করেন বলে জানা যায়। তবুও প্রচুর মানুষ যেন হুমড়ি খেয়ে পড়েন ভেটাগুরির জিলিপির দোকানের সামনে। ভেটাগুড়ির নন্দী পরিবার গত প্রায় ৭৮ বছর ধরে একই গুণমানের জিলিপি তৈরি করে আসছেন। দোকানের মালিক অসিত নন্দী বলেন, আমার দাদু প্রথম ভেটাগুড়ি থেকে এসে কোচবিহারের রাস মেলায় এই জিলিপি বানানো শুরু করেন।

এরপর আমার বাবা এতদিন বানিয়ে আসছেন এখন আমি এবং আমার কাকা জিলিপি বানাচ্ছি। গত ৭৮ বছর ধরে একই ধরনের জিলিপি বানিয়ে আসছি এর গুণগত মানের কোন রূপ পরিবর্তন করিনি। কোচবিহার রাস প্রথম শুরু হয়েছিল ভেটাগুরিতে, এখান থেকেই ভেটাগুড়ির জিলাপির ঐতিহ্য দিন প্রতিদিন বৃদ্ধি পেয়েছে। সবাই জিলিপি বানাতে যা যা ব্যবহার করে, আমরাও তাই ব্যবহার করি তবে এর সাথে আমাদের বিশেষ কিছু থাকে যা আমরা ছাড়া কেউ জানে না। তাই অন্যদের জিলিপি পরের দিনই নরম হয়ে যায় কিন্তু আমাদের জিলিপি পরের দিন একই থাকে। দোকানের কর্মচারী বিশ্বজিৎ বর্মন বলেন আমরা চিনি এবং চালের গুঁড়ো বেশি করে ব্যবহার করি, আমাদের এখানে কোনরকম ভেজাল থাকে না। প্রতিদিন প্রায় কুড়ি বস্তা চিনি প্রয়োজন হয় আমাদের জিলিপি তৈরি করতে।

জিলিপির লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা রফিক আলম যে কিনা কোচবিহারের একজন এডভোকেট তিনি বলেন রাস মেলায় এসে সার্কাস এবং ভেটাগুড়ির জিলিপি অবশ্যই নিয়ে যেতে হবে। এই জিলিপির অন্যরকম টেস্ট পাওয়া যায়। আমরা কোচবিহারের মানুষ রাসমেলা এলে এই জিলিপি টা কিনবই সেই সাথে সার্কাস দেখবোই।অপর একজন ক্রেতা শুভশ্রী চক্রবর্তী বলেন, ভেটাগুড়ির জিলিপি, মুচমুচে এবং খুব সুস্বাদু, বাড়িতে সুগারের পেশেন্ট রয়েছে তবুও ভেটাগুড়ির জিলিপি নিতেই হবে। যদিও বা কোচবিহারের প্রসিদ্ধ কিছু মিষ্টির দোকান সুগার ফ্রি জিলাপি তৈরি করছেন। কিন্তু তাতেও এক মুহূর্তের জন্য আবেগ কম হয়নি ভেটাগুড়ির জিলাপির ক্ষেত্রে।