আকারে ছোট হলেও খাবারের পাতে ইলিশকে টেক্কা যে বোরোলি দেয়, সে কথা দাবি করেন উত্তরের অনেকেই। তা সে ভাপা হোক বা সর্ষে বাটা। আর যদি মচমচে ভাজার কথা বলা হয়, তবে বোরোলির ধারেকাছে আসতে পারবে না কেউ। শোনা যায়, কোচবিহারের মহারানি ইন্দিরা দেবী থেকে ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের প্রিয় মাছ ছিল বোরোলি। মহারানি যখন কলকাতা বা মুম্বইয়ে থাকতেন, তখন বিমানে করে বোরোলি পৌঁছে যেত সেই সব শহরে। এমনকি, রাষ্ট্রপতি ভবনেও যাত্রা করেছিল বোরোলি। রাজ্যের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য উত্তরবঙ্গ সফরে এলেই পাতে রাখতেন বোরোলি মাছ। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও প্রিয় মাছের তালিকায় রয়েছে বোরোলি।
তার স্বাদের খ্যাতি যখন দেশ-বিদেশে ক্রমশই ছড়িয়ে পড়ছে। সেই সময়ই টান পড়েছে বোরোলির ‘ভাঁড়ারে’। পর্যটকেরা ডুয়ার্স বা কোচবিহারে এসেই খোঁজ করছেন বোরোলির। অথচ, অনেক হোটেল-রেস্তোরাঁ হাত তুলে দিয়ে বলছেন, “বোরোলি আউট অব স্টক।’’ যাঁরা হাত তুলেছেন তাঁদের রান্নাঘরে খোঁজ মিলছে গঙ্গার বোরোলির।তা হলে কোথায় গেল তোর্সা, তিস্তার বোরোলি?উত্তরবঙ্গের বাজারে তোর্সা, তিস্তার বোরোলির কদরই বেশি। স্বাদে-গন্ধে দুই নদীর বোরোলি ‘অতুলনীয়’ বলেই মাছপ্রেমীদের দাবি। তুলনায় তোর্সার বোরোলি কিছুটা এগিয়ে বলেও অনেকের দাবি। এক সময় দুই নদী থেকে কেজির পরে কেজি বোরোলি মাছ উঠত। এখন অবশ্য বোরোলির দেখা পাওয়া খুব ভার। তোর্সার পারে বসবাস বহু মৎস্যজীবী পরিবারের। তাঁদের অনেকেই জানান, রাতভর জাল ফেলে এক কেজির বেশি বোরোলি মাছ পাওয়া যায় না। এমনকি, ভরা মরসুমেও জালে পড়ে বড়জোর দুই কেজি বোরোলি। কোনও কোনও দিন আবার একটি বোরোলিও জালে ধরা পড়ে না।