প্রত্যক্ষ রাজনীতি আর নয়, উপাচার্য হয়ে ঘোষণা ওমপ্রকাশের

আর প্রত্যক্ষ রাজনীতি নয়। তৃণমূলের কোনও পদেও থাকবেন না। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদে বসে জানালেন ওমপ্রকাশ মিশ্র। বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পদে দায়িত্ব নেন ওমপ্রকাশ মিশ্র। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘‘গত কাল (বুধবার) সন্ধ্যায় নোটিফিকেশন আসে। এবং আমার সম্মতি নেওয়া হয়েছিল। যে হেতু পুজোর ছুটির আগে শেষ দিন, তাই মনে করলাম আজই যোগ দেওয়া উচিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু দফতরের কাজ, পরীক্ষা বিষয়ক কাজ বাকি আছে। ছুটির আগেই সেই সব কাজ করব।’’এর পরই ওমপ্রকাশের ঘোষণা, ‘‘উপাচার্যের দায়িত্বে থাকাকালীন প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে আমার কোনও সংস্পর্শ থাকবে না। আমি দলের কোনও পদে থাকব না। এবং এই বিষয়ে আমি আমার নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছি।’’ ওমপ্রকাশের এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ।শিক্ষক নিয়োগ ‘দুর্নীতি’ মামলায় নাম জড়ানোর পর উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে। তাঁর জায়গায় উপাচার্য করে আনা হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ওমপ্রকাশকে। যিনি এখানকার ভূমিপুত্রও বটে। শিক্ষকতার পাশাপাশি দীর্ঘ দিন প্রত্যক্ষ রাজনীতি করেছেন।

২০১৯ সালে তৎকালীন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন। বিধানসভায় কংগ্রেস পরিষদীয় দলের তরফে যখন লোকসভার দলনেতা মনোনীত হওয়ায় অধীর চৌধুরীকে সংবর্ধিত করা হচ্ছে, ঠিক সেই সময় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে গিয়ে তাঁর দলে যোগ দেন ওমপ্রকাশ। একাধিক ভোটে লড়েছেন। ২০০৪ সালের লোকসভা ভোটে যাদবপুর লোকসভা কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী ও তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণা বসুর লড়াইয়ের মধ্যে জামানত হারান। ২০০৬ সালে বিধানসভা ভোটে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের টিকিটে প্রার্থী হন ওমপ্রকাশ। সে বারও জামানত হারিয়ে তৃতীয় স্থানে শেষ করেন তিনি।

২০১৪ সালে নিজের জেলা বালুরঘাট থেকে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে জামানত হারিয়ে চতুর্থ স্থানে ছিলেন। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মমতার বিরুদ্ধে প্রার্থী হতে চেয়ে ওমপ্রকাশ আবেদন করেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ও এআইসিসি নেতৃত্বের কাছে। বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী হিসাবে ভবানীপুরে তাঁর নামে দেওয়াল লিখনও হয়ে গিয়েছিল। এমনকি, প্রচারেও বেরিয়েছিলেন ওমপ্রকাশ। তবে শেষ পর্যন্ত ওই আসনে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস জোটের প্রার্থী হন দীপা দাশমুন্সী। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে তৃণমূল ওমপ্রকাশকে টিকিট দিয়েছিল শিলিগুড়ি আসনে। সে বারও পরাজিত হন বিজেপি প্রার্থী শঙ্কর ঘোষের কাছে।বৃহস্পতিবার ওমপ্রকাশ জানান, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়কে উন্নততর করবেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে গরিমায় গৌরবে গর্বিত। আমরা সব অধ্যাপক মিলে আরও ভাল কাজ করব।’’