বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে চর্চার মধ্যে চলতি বছরেই শতাব্দীর দ্বিতীয় উষ্ণতম নভেম্বর দেখল ভারত! এমনকি ১৯০১ সালের পর থেকে এখনও পর্যন্ত এই প্রথম এত চড়ল নভেম্বরের পারদ। এমনটাই দাবি করা হয়েছে মৌসম ভবনের রিপোর্টে।আবহাওয়া দফতরের ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, চলতি বছরের নভেম্বর মাসে দেশের গড় সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যথাক্রমে ০.৬২ ডিগ্রি এবং ১.০৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে।
আবহাওয়া দফতরের দাবি, ১৯০১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ১২৩ বছরে মাত্র এক বার ছাড়া এত উষ্ণ নভেম্বর দেখেনি ভারতের কোনও শহর! সর্বাধিক তাপমাত্রার নিরিখে ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসটি চলতি শতাব্দীর দ্বিতীয় উষ্ণতম নভেম্বর। দেশের বিভিন্ন জায়গায় দিনের গড় তাপমাত্রার নিরিখেও চলতি বছরের নভেম্বর তৃতীয় স্থানে রয়েছে। তাপমাত্রা সবচেয়ে বেড়েছে উত্তর-পশ্চিম ভারতে। সেখানে নভেম্বরের গড় তাপমাত্রা এক ধাক্কায় ১.৩৭ ডিগ্রি বেড়ে গিয়েছে। মধ্য এবং দক্ষিণ ভারতেও একই চিত্র। সেখানেও চলতি বছরের নভেম্বরে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশিই ছিল তাপমাত্রা। তবে আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, চলতি বছরে পর্যাপ্ত সংখ্যায় পশ্চিমি ঝঞ্ঝা এবং ঘূর্ণিঝড়ের অভাবেই নভেম্বরের তাপমাত্রা বেড়েছে। আইএমডির অধিকর্তা মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলছেন, ‘‘পশ্চিমি ঝঞ্ঝাগুলি এ বার জম্মু ও কাশ্মীরের উচ্চ অক্ষাংশ বরাবর অতিক্রম করেছে। ফলে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম ভারতের সমভূমি অঞ্চলে বেশি বৃষ্টিপাত হয়নি।
এ ছাড়া দু’টি ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে একটি বেশ দুর্বল ছিল। ফলে নভেম্বরে বৃষ্টি কম হয়েছে দক্ষিণ ভারতেও।’’ উত্তর-পশ্চিম ভারতে নভেম্বর মাস জুড়ে গড়ে ২.৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৭৯.৯ শতাংশ কম। দক্ষিণ ভারতে সেই ঘাটতির পরিমাণ ৩৭.৯ শতাংশ।ভারত উত্তর গোলার্ধের দেশ। সাধারণত নভেম্বরের শুরু থেকেই কমবেশি শীতের আমেজ অনুভূত হতে শুরু করে দেশে। এ বার সেই নভেম্বরের তাপমাত্রাই কপালে ভাঁজ ফেলেছে আবহবিদদের। বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে এমনিতেই পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বাড়ছে। বদলাচ্ছে জলবায়ুর প্রকৃতিও। সেই আবহে এ বার শীতের আগমনে দেরি ভাবাচ্ছে পরিবেশপ্রেমীদের ।