নতুন আতঙ্ক, এবার বন্যার কবলে আফগানিস্তান

তালিবানি শাসন শুরুর পর থেকে শুরু আতঙ্কেই সময় কাটছে আফগানিস্তানের মানুষের। প্রতিনিয়ত ভয় থাকে তালিবানি শাসনের। এরই মাঝে নতুন আতঙ্ক। এবার ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প তাদের জীবন আরও দুর্বিষহ করে তুলল। জানা গিয়েছে, বুধবারই জোরালো ভূমিকম্পে আফগানিস্তানে এক ধাক্কায় হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এখনও নিখোঁজ কয়েক হাজার মানুষ। ফলে আগামীতে যে এই মৃতের সংখ্যা কার্যত লাফিয়ে লাফিয়ে  বাড়বে তা এককথায় পরিষ্কার। দিনরাত এক করে চলছে উদ্ধার কাজ, কিন্তু তারপরেও এখনো বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে রয়েছে বলে আশঙ্কা। এমতাবস্থায় আরও এক ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি কাবুলিওয়ালার দেশ।

জানা যাচ্ছে আফগানিস্তানের দক্ষিণ-পূর্বের পাপতিকা প্রদেশ,  যেখানে এই ভূকম্পনের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে সেই এলাকাতে বুধবার রাত থেকে শুরু হয়েছে ব্যাপক বৃষ্টিপাত। ইতিমধ্যেই ভূমিকম্পের কারণে কার্যত লন্ডভন্ড গোটা এলাকা। তার মধ্যেই বৃষ্টিতে ভূমিধস নামায় বিধ্বস্ত এলাকাতে উদ্ধার কাজ চালানো তো দূর অস্ত, অধিকাংশ এলাকাতে পৌছতেই পারছেন না উদ্ধারকারী দল। এমনিতেই ওই গোটা এলাকার রাস্তা অত্যন্ত দুর্গম এবং সাধারণ অবস্থাতেই চলাচল করতে যথেষ্ট সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় মানুষকে। তার মধ্যে ভূমিকম্প হওয়ায় পুরো রাস্তাটাই ভেঙেচুরে গিয়েছে। এমতাবস্থায় ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ায় রাতারাতি মৃত্যুপুরীর রূপ নিয়েছে গোটা এলাকা।

এই ভূমিকম্প সম্পর্কে তালিবানের মুখপাত্র আন্তর্জাতিক একটি সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছে, ওই প্রদেশের অধিকাংশ বাড়িই কাঁচা। যে কয়েকটি পাকা বাড়ি রয়েছে সেগুলো ভূমিকম্পের হাত থেকে কোনওক্রমে রক্ষা পেয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ কাঁচা বাড়িরই আর কোনো অস্তিত্ব নেই। এছাড়া ভূমিকম্পের কারণে বহু পাহাড়ি এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ধস নেমেছে। এমতাবস্থায় বুধবার রাত থেকে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে। ফলে এই ভূমিকম্পের জেরে যারা ভিটে মাটি হারিয়েছেন তাদের কাছে খাদ্য, বস্ত্র, ওষুধের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছানো পর্যন্ত সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি ভূমিকম্পের কারণে মোবাইল ফোনের টাওয়ার এবং বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ায় এলাকাগুলি সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন বলে খবর।

এর মধ্যেই যখন একদিকে ভূমিকম্পের পরিস্থিতি মোকাবেলায় ঝাঁপিয়ে পড়েছে উদ্ধারকারী দল, তখনই বুধবার রাতের বৃষ্টির কারণে ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে খবর। ফলে যে সমস্ত এনজিও এবং উদ্ধারকারী দল যে সমস্ত বিধ্বস্ত এলাকাগুলিতে উদ্ধারকাজ চালানোর কাজ করেছিলেন তারা সেই কাজ আপাতত বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, ভূমিকম্পের পরেই আফগানিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় অদ্ভুত আবহাওয়ার দেখা মিলছে। কোন কোন এলাকায় প্রবল বৃষ্টিপাতের সঙ্গে যখন শিল পড়ছে, তখন কোনও কোনও এলাকায় আবার এই জুন মাসে তুষারপাত শুরু হয়েছে বলে খবর।