এই মহুর্তে বাংলা দেশ নিয়ে প্রকাশ্যে এলো নতুন তথ্য। ‘খুদার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়’৷ কবি সুকান্তের লেখা কবিতার এই পংক্তি যেন প্রচ্ছন্নে তুলে ধরেছে বাংলাদেশের পরিস্থিতিকে৷ যদিও সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দাবি ধীরে ধীরে খাদ্যেও স্বয়ং সম্পূর্ণ হয়ে উঠেছে দেশ৷ খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে বাংলাদেশে৷
কিন্তু রিপোর্ট বলছে, বাংলাদেশের প্রায় ৭৩ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্যকর খাবার থেকে বঞ্চিত। দ্য স্টেট অফ ফুড সিকিউরিটি অ্যান্ড নিউট্রিশন ইন দ্য ওয়ার্ল্ড ২০২২ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুষ্টিকর খাবার কিনতে একজন বাংলাদেশিকে প্রতিদিন খরচ করতে হয় ২৭৬ টাকা। কিন্তু, ২০১৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের ৭৭.৪ শতাংশ মানুষই স্বাস্থ্যকর খাবার জোগাড় করতে পারতেন না৷
যদিও গত পাঁচ বছরে এই পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে৷ ২০২২ সালের নিরিখে স্বাস্থ্যকর খাবার পান না এমন বাংলাদেশির সংখ্যা ৭৩ শতাংশে নেমেছে৷ বাংলাদেশের পাশাপাশি সমীক্ষা চালানো হয় দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলিতেও৷ তাতে দেখা গিয়েছে, সবচেয়ে খারাপ অবস্থার মধ্যে রয়েছে নেপাল।
স্বাস্থ্যকর খাবার কিনতে পারে না এমন দেশের তালিকায় পূর্বে নেপালের আগে ছিল পাকিস্থান। উল্লেখ্য, যৌথভাবে এই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন, ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচার ডেভলপমেন্ট, ইউনিসেফ, ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম এবং বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (হু)৷
সমীক্ষা রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থায় রয়েছে শ্রীলঙ্কা এবং ভুটান। যদিও গত কয়েক মাসে শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতিতে আমূল পরিবর্তন এসেছে৷ খাদ্যের আভাবে হাহাকার করছে সে দেশের মানুষ৷ আর্থিক সংকটে ধুঁকছে দেশ৷ না আছে খাবার, না আছে জ্বালানি৷ প্রতিবাদে কলম্বোর রাস্তায় নেমেছে মানুষের ঢল৷
তারপরেও কিন্তু দ্বীপরাষ্ট্রের মানুষ স্বাস্থ্যকর খাবার কেনার তালিকায় শীর্ষ স্থানে রয়েছে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, Healthy Diet-এর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের তুলনায় সামান্য ভাল অবস্থায় রয়েছে ভারত৷ সমীক্ষা রিপোর্ট অনুসারে, দক্ষিণ এশিয়ার মাত্র ৪১.১ শতাংশ মানুষ প্রতিদিন স্বাস্থ্যকর খাবার পান।
এই রিপোর্টে উঠে এসেছে চমকে দেওয়ার মতো তথ্য৷ সেখানে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে প্রায় ৩.১ বিলিয়ন মানুষ স্বাস্থ্যকর খাবার থেকে বঞ্চিত ছিলেন। তার আগের বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে এই সংখ্যাটা ছিল ১১২ মিলিয়নেরও বেশি।
এর কারণ হিসাবে রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে কোভিড পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক প্রভাব এবং পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল, তা থেকে উদ্ভূত খাদ্যের মূল্যস্ফীতির সমস্যাকে৷ ওই সমীক্ষায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২১ সালে করোনা অতিমারির মধ্যেও খাদ্য নিরাপত্তা কিছুটা উন্নত হয়। যদিও ওই বছর বিশ্বে অনাহার এবং ক্ষুধার সূচক বৃদ্ধি পায়৷
করোনাকালে বিশ্ব জুড়ে অর্থনীতিক মন্দার প্রভাব এসে পড়েছিল খাদ্যের উপর৷ যার জন্য ২০২০ সালে বিশ্ব জুড়ে প্রায় ৫ বছরের নীচে থাকা ২২ শতাংশ শিশু প্রভাবিত হয়। যে সকল মায়েরা ঠিক মত শিক্ষা পাননি এবং একেবারে দরিদ্র তাদের উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাবে পড়ে। বিশ্ব জুড়ে food insecurity এবং অপুষ্টি বৃদ্ধি পায়৷