নতুন অভিযোগ, টেট পরীক্ষা পাশ না করেই চাকরি পেয়েছিলেন কেষ্ট-কন্যা

এদিকে গরু পাচারকাণ্ডে জর্জরিত রাজ্যের হেভি ওয়েট নেতা অনুব্রত মণ্ডল। এরই মাঝে উঠে আসছে নতুন অভিযোগ। পরেশ অধিকারীর কন্যার পর এবার অনুব্রত-কন্যার বিরুদ্ধে হাই কোর্টে মামলা৷ প্রথামিক শিক্ষিকার চাকরি পেলেও কোনও দিনও স্কুলে পড়াতে যাননি সুকন্যা মণ্ডল৷ হাজিরার রেজিস্টার পাঠানো হত অনুব্রতর বাড়িতে৷

টেট পাশ না করেই বোলপুরের কালিকাপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি পেয়েছিলেন কেষ্ট-কন্যা৷ অনুব্রতর বাড়ি থেকে এই প্রাথমিক স্কুলের দূরত্ব মাত্র ৫ মিনিট৷ হাই কোর্টে এমনই অভিযোগ দায়ের করলেন মামলাকারীর আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের৷

এদিকে গরু পাচার মামলায় সিবিআই ব়্যাডারে সুকন্যার অগাধ সম্পত্তি৷ এদিন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে অনুব্রতর বাড়িতেও যান সিবিআই-এর আধিকারিকরা৷ কিন্তু, তিনি কথা বলতে চাননি৷ পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১২ সালে প্রাথমিক স্কুলের চাকরিতে যোগ দেন সুকন্যা।

কিন্তু দীর্ঘদিন স্কুলে না গিয়েই বেতন নিতেন তিনি। হাজিরার রেজিস্টার পাঠানো হত তাঁর বাড়িতে৷ শোনা যাচ্ছে, অনুব্রত গ্রেফতারের পর নিয়োগ-বিতর্ক এড়াতে চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন সুকন্যা। যদিও, বীরভূম জেলার প্রাথমিক সংসদের চেয়ারম্যান প্রলয় নায়েক জানিয়েছেন, সুকন্যার ইস্তফার খবর তাঁর জানা নেই। তিনি বলেন, আমি জানি ছুটিতে রয়েছেন সুকন্যা৷

তবে শুধু অনুব্রত-কন্যা সুকন্যা মণ্ডলই নয়, আরও পাঁচজন একই ভাবে বেআইনি ভাবে চাকরি পেয়েছিলেন৷ এই তালিকায় রয়েছেন সুমিত মণ্ডল (অনুব্রতর ভাই), অর্ক দত্ত (পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট), সাত্বকী মণ্ডল (ভাইপো), কস্তুরী চৌধুরী এবং সুজিত বগদির৷ কস্তুরী এবং সুজিত অনুব্রত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত৷

অনুব্রত কন্যা সহ এই ছয়জন কেউ কোনও দিন স্কুলে গিয়েছেন কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে৷ বিশেষ করে সুকন্যা যে কোনও দিন স্কুলে হাজিরা দেননি, তা স্পষ্ট ভাবে আদালতে উল্লেখ করা হয়েছে৷ এখানেই শেষ নয়৷ তাঁদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ, এই ছয় জনের কেউই টেট উত্তীর্ণ নন৷

অনুব্রত মণ্ডলের পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠ এই ছয়জনকে আজ বেলা তিনটের মধ্যে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসের সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ সেখানে তাঁদের টেট পাশের সংশাপত্র ও নিয়োগপত্র খতিয়ে দেখবেন বিচারপতি৷

এক সপ্তাহ আগে গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হন বীরভূমে তৃণমূল জেলা সভাপতি৷ তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে তেমন সম্পত্তি না মিললেও, তাঁর মেয়ে সুকন্যার নামে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে সিবিআই৷

বুধবার সকালে অনুব্রতর হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআই আধিকারিকরা। এর পর বেলা ১২টা ১০ নাগাদ বোলপুরের নিচুপট্টি এলাকায় অনুব্রতর বাড়িতে পৌঁছন তাঁরা। সেখানে তাঁরা সুকন্যাকে নোটিস দেন। ১২টা ২৫ নাগাদ সেখান থেকে বেরিয়ে যান। সিবিআই সূত্রে খবর, সুকন্যা তাঁদের সঙ্গে কথা বলেননি৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার মা মারা গিয়েছেন। বাবা গ্রেফতার হয়েছেন। এই মুহূর্তে আমার মানসিক অবস্থা ভাল নেই।’’