আরো একাধিক ঝড়ের আশংকা কলকাতার ওপর দিয়ে

গত বছর একের পর এক ঝড় ধেয়ে গেছে রাজ্যের ওপর দিয়ে৷ ঘনিয়ে আসছে বিপদ! ২০৫০ সালের মধ্যে কলকাতা সহ গোটা রাজ্যজুড়ে বাড়বে প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা৷ বন্যায় ভাসবে তিলোত্তমা৷ জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে এমনই আশঙ্কার কথা শোনাল রাষ্ট্রপুঞ্জে জমা পড়া একটি সমীক্ষার রিপোর্ট৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আসু পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বড় বিপদ অপেক্ষা করছে কলকাতা ও রাজ্যের জন্যে৷ 

রাষ্ট্রপুঞ্জে পেশ করা আইটিসিসি রিপোর্টে বলা হয়েছে, কলকাতা ও রাজ্যে ক্রমেই আম্পানের মতো প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা বাড়তে পারে৷ আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়তে পারে শহর কলকাতা৷ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে লবনাক্ত জলে ডুবে যেতে পারে সুন্দরবন ও সংলগ্ন অঞ্চলের নীচু এলাকাগুলি৷ আইটিসিসি-র জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত একটি প্যানেল তিন বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করার পর জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত এই রিপোর্ট রাষ্ট্রপুঞ্জে জমা দিয়েছে৷ রিপোর্টে বলা হয়েছে, আবহাওয়া পরিবর্তনের জেরে কলকাতা ও রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকায় বারবার আছড়ে পড়তে পারে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়৷

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, গত পাঁচ বছরের নিরিখে ঘূর্ণিঝড়ের প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে৷ পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগণা সারা ভারতবর্ষের মধ্যে এমন একটি জেলা, যেখানে সবচেয়ে বেশি সাইক্লোন আঘাত করেছে৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে শুধু কলকাতা নয়, ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়তে পারে দেশের আরও ২০টি মহানগর৷ তাছাড়া সুন্দরবনের মতো যে সকল অঞ্চলে বারবার বাঁধ ভেঙে নোনা জল ঢুকে পড়ায় চাষের ক্ষতি হচ্ছে, মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছে সেখানে ইকোসিস্টেম বা বাস্তুতন্ত্র ব্যহত হবে৷ মানব জীবনের উপর প্রবল চাপ তৈরি হবে৷ 

দার্জিলিং জেলার বহু অংশে ইতিমধ্যেই নানা পরিবর্তন বিজ্ঞানীদের চোখে ধরা পড়েছে৷ জলবায়ু পরিবর্তন এবং দূষণই এর প্রধান কারণ বলে মনে করা হচ্ছে৷ রিপোর্টে বলা হয়েছে, উষ্ণায়নের জেরে অধিক মাত্রায় হিমবাহ গলার ফলে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন নদীর জলস্তরও অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে৷ সেই সঙ্গে আদ্রতা জনিত কষ্ট ও গরমও বাড়তে পারে৷ আবহাওয়াবিদের কথায়, হিমবাহ গলে গেলে পার্বত্য অঞ্চলের ভূমিভাগের উপর যে চাপ থাকে সেই চাপ কমে যাবে৷ যার ফলে ভবিষ্যতে পার্বত্য অঞ্চলে শুধু ইকোসিস্টেম নয়, ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যাও উত্তোরত্তর বৃদ্ধি পাবে৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আবহাওয়া তাণ্ডব রুখতে এখন থেকেই সতর্ক হতে হবে৷ শহরজুড়ে সবুজায়ন, জলাশয়, লেক, নদী সুরক্ষিত করার প্রয়োজন রয়েছে৷