সুসম্পর্কের বার্তা নতুন প্রধানমন্ত্রীর তরফে

বিশ্বের মধ্যে এই মুহূর্তে সব চেয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কার। লঙ্কাপুরীতে পরিণত হয়েছে সব কিছু। চারিদিকে জ্বলছে আগুন। অশান্তির আগুন পুড়ছে শ্রীলঙ্কা৷ দেশজুড়ে চলা বিক্ষোভ, আন্দোলন এবং অচলাবস্থার মধ্যেই শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন রনিল বিক্রমসিংহে। প্রসঙ্গত, এই নিয়ে ষষ্ঠবার শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী পদে নিযুক্ত হলেন তিনি। এই মুহূর্তে দেশজুড়ে যে অচলাবস্থা জারি রয়েছে তাতে একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদই দেশের শান্তি ফেরত আনতে সক্ষম, এমনটাই মনে করে বিক্রমাসিংহের উপর আস্থা রেখেছেন শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি গোতাবায়ে রাজাপক্ষে। নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েই শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়ে ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার ডাক দিলেন।

এদিন শ্রীলঙ্কার ২৬ তম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন বিক্রমাসিংহে। এরপরেই তাঁর কথায় ফুটে ওঠে ভারতের সঙ্গে আরও গভীর সম্পর্ক গড়ার বার্তা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি চাই ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়তে এবং সেইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদিকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই। প্রতিবেশী দেশের বিপদের সময় বন্ধু হিসেবে পাশে থেকেছে ভারত, বাড়িয়ে দিয়েছে সাহায্যের হাত।’ সেই সঙ্গে দেশের বর্তমান পরিস্থিতির কথা বলেছেন বিক্রমাসিংহে। তাঁর কথায়, ‘আমি এই সমস্যার সমাধান করতে চাই আপাতত শুধু সে দিকেই মনোনিবেশ করবো আমি। পেট্রোল, ডিজেল, বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে চাই দেশের নাগরিকদের জন্য। যে কাজ করার দায়িত্ব আমি নিয়েছি সে কাজ আমি করেই ছাড়ব।’

বুধবার রাতেই দেশজুড়ে যখন দাউদাউ করে জ্বলছে বিক্ষোভের আগুন তখনই রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন যে চলতি সপ্তাহের মধ্যেই দেশ পেতে চলেছে তাঁদের পরবর্তী এবং নতুন প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গেই সংসদের সদস্যদের নতুন কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। এরপর রাত কাটতে না কাটতেই বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই শোনা যায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রনিল বিক্রমাসিংহকেই নিযুক্ত করতে চলেছেন শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি। যদিও চীনপন্থী রাজাপক্ষে পরিবারের সঙ্গে খুব একটা ভালো সম্পর্ক কোনও দিনই ছিল না ভারতপন্থী বিক্রমাসিংহের। এর আগে প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থাকাকালীন তিনি বারবার রাজাপক্ষে পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন এবং প্রয়োজনে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও দাবি করেছিলেন।

কিন্তু এই মুহূর্তে দেশের এমন চরম সংকটের সময় নিজেদের ব্যক্তিগত শত্রুতা বলে অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদদের উপর ভরশা করারই সিদ্ধান্ত নেন রাষ্ট্রপতি গতাবায়া রাজাপক্ষে। বৃহস্পতিবার সকাল হতে না হতেই বিক্রমাসিংহের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয় রাজাপক্ষের। সেই বৈঠকের পরে প্রায় একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল যে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিক্রমাসিংহকেই দেখতে চলেছে দেশ। সেই জল্পনাকে সত্যি প্রমাণিত করে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন বিক্রমাসিংহে। এমতাবস্থায় ৭৩ বছর বয়সী অভিজ্ঞ এই রাজনীতিবিদ দেশের পরিস্থিতির ক্ষেত্রে কোনও পরিবর্তন আনতে পারে কিনা এখন সেটাই দেখার।