দূরত্ব বাড়লো মমতা পিকে’র

পূর্ব থেকেই বাড়ছিলো দূরত্ব৷ এবার আরও চওড়া তৃণমূল-আই প্যাক সম্পর্কের ফাটল৷ টুইটারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘ফলো’ করা বন্ধ করে দিল প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাক৷ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আইপ্যাকের অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে ৭৭টি অ্যাকাউন্ট ফলো করা হত৷ শুক্রবার দেখা গেল সেই সংখ্যাটা কমে ৭৬ হয়ে গিয়েছে৷ তাহলে বাদ গেল কোনটি? খোঁজ নিতেই জানা যায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টুইটার হ্যান্ডেল আনফলো করেছে আইপ্যাক৷ 

আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিচ্ছেদের কথা কোনও তরফেই ঘোষণা করা হয়নি৷ তবে তৃণমূলের প্রবীণ নেতাদের সঙ্গে আই প্যাকের যে দূরত্ব বেড়েছে, তা স্পষ্ট৷ সম্পর্ক যে খাদের কিনারায় এসে ঠেকেছে, তা একান্ত আলোচনায় দলের নেতারা স্বীকার করে নিয়েছেন৷ তৃণমূলের একাংশের মতে, আই-প্যাকের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ এখন সময়ের অপেক্ষা৷ সেই দাবিকে স্বীকৃতি দিয়েই যেন আইপ্যাকের অফিশিয়াল টুইটার হ্যান্ডল থেকে মমতাকে ‘আনফলো’ করা হল৷ অনেকেই এটিকে বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া শুরুর প্রথম পর্যায় বলে মনে করছে৷ প্রথম পদক্ষেপটি করল আইপ্যাক৷ 

উল্লখ্য, প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সহ কংগ্রেসের সাংসদ রাহুল গান্ধী, মহাসচিব প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস আর রেড্ডি-সহ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফলো করে। গতকাল পর্যন্ত এই তালিকায় ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও৷ 

গত বছর নভেম্বরে মাসে কলকাতা পুরভোটকে কেন্দ্র করে তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্ব ও আইপ্যাকের মধ্যে যে ‘ঠান্ডা লড়াই’ শুরু হয়েছিল, তা বাইশের পুরভোটে চরমে পৌঁছল। আর অশান্তির আগুনে নতুন করে ঘি দিল প্রার্থিতালিকা নিয়ে বিভ্রান্তির ঘটনা। যদিও আইপ্যাকের তরফে বলা হয়েছে, প্রার্থী তালিকা প্রকাশের সঙ্গে তাঁদের কোনও সম্পর্ক নেই৷ 

ভোটকুশলী পিকে’র সংস্থা আইপ্যাকের কর্মপদ্ধতি নিয়ে দলের বর্ষীয়ান নেতাদের একটা বড় অংশ বেশ রুষ্ট। তাঁরা এই বিষয়ে দলনেত্রীর কাছেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন৷ পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আইপ্যাকের উপর রুষ্ট হন৷ 

২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের পর বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে কাজ করতে আসেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর৷ লোকসভা ভোটে বিজেপি’র কাছে ধাক্কা খাওয়ার পর ২০২১ সালের বিধানসভা ভোট ছিল তৃণমূলের কাছে প্রেস্টিজ ফাইট৷ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে বাংলায় আসেন পিকে৷ একুশের নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই থেকে ভোট কৌশল তৈরি, একাধিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি৷ দলের অন্দরে তাঁর এই গুরুত্ববৃদ্ধি ভালো চোখে নেননি অনেক বর্ষীয়ান নেতাই৷  এরই মধ্যে দিন কয়েক আগে ‘টেক্সট মেসেজ’ পাঠিয়ে পিকে মমতাকে জানান, তাঁরা আর তৃণমূলের সঙ্গে বাংলা, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে কাজ করতে চান না। সূত্রের খবর, মমতা এই বার্তা পাওয়ার পরেই তৎক্ষণাৎ জবাবে দলনেত্রী বলেন, ‘থ্যাঙ্ক ইউ।’