রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং জনপ্রিয়তায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মতো কোনও মুখ বিজেপি তুলে ধরতে পারেনি। বাইরে থেকে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহেরা এসেও বাঙালিয়ানায় এঁটে উঠতে পারেননি। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির হারের পরে এমন টাই মন্তব্য করেছে খোদ আরএসএসের মুখপত্রে। তৃণমূল থেকে বাছ-বিচার না করে লোক ভাঙিয়ে আনার নীতিকেও বিজেপির বিপর্যয়ের জন্য দায়ী করা হয়েছে, সঙ্গে মমতার নেতৃত্ব ও জনপ্রিয়তাকে কৃতিত্ব দিয়েছে সঙ্ঘ। পশ্চিম বঙ্গে আসন-সংখ্যা ৩ থেকে বেড়ে ৭৭ হয়েছে বিজেপি, মর্যাদা পেয়েছে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে। এটিকে বিজেপির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্ব ‘ইতিবাচক’ বলেই দেখাতে চাইলেও আরএসএস এর মত সম্পূর্ণ উল্টো ।
দু’বছর আগে লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি যা ফল করেছিল, তার সঙ্গে তুলনা টেনে এ বারের প্রদর্শনকে তারা বিপর্যয় বলেই মনে করছে। লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় বিজেপির ২% কমেছে এবার বিধানসভা নির্বাচনে। পশ্চিমবঙ্গে ভোটের ফল প্রকাশের পরে আরএসএসের মুখপত্রে দু’টি নিবন্ধে বলা হয়েছে, যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজ্যে বিজেপির মূল লড়াই, সেই দল থেকেই লাগাতার লোক ভাঙিয়ে নিয়ে আসার নীতির ফল একেবারেই ভাল হয়নি। একে ‘ব্যাড এক্সপেরিমেন্ট’ বলে আখ্যা দিয়েছে আরএসএস। যাঁদের তৃণমূল থেকে নিয়ে আসা হল, তাঁদের কার্যকারিতা যাচাই করে দেখা হয়নি বলেও সরব হয়েছে তারা।
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি যেখানে ১২১টি বিধানসভা কেন্দ্রে এগিয়ে ছিল, সেখান থেকে ২০২১-এ ৭৭ আসনে নেমে আসাকে খারাপ ফল বলেই ধরতে হবে, আরএসএস এমনটাই পরিসংখ্যান দেখিয়েছে। একটি নিবন্ধে আরএসএসের তরফে ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে তৃণমূল নেত্রীর। বলা হয়েছে, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক উচ্চতার সঙ্গে বিজেপির রাজ্য স্তরের কোনও নেতা খাপ খাওয়াতে পারেননি’। মমতার রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও জনপ্রিয়তার সঙ্গে পাল্লা দেওয়া যায়নি। নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহেরা জনপ্রিয় হলেও বাঙালিয়ানার সঙ্গে মেলেনি বলে তাঁদের জনপ্রিয়তা বাংলায় কাজে আসেনি!