পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শনিবার শেষকৃত্য সম্পন্ন হল প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের

পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শনিবার শেষকৃত্য সম্পন্ন হল প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের। সকালে কংগ্রেসের সদর দফতরে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মরদেহ শায়িত রাখা হয়। সেখানে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান কংগ্রেস নেতৃত্ব এবং অন্য রাজনীতিকেরা। কংগ্রেসের সদর দফতর থেকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর দেহ নিয়ে আসা হয় যমুনা নদীর ধারে পূর্বনির্ধারিত নিগমবোধ ঘাটে। সেখানেই পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ বিদায় জানানো হয় মনমোহন সিংহকে। নিগমবোধ ঘাটে শনিবার তাঁর শেষকৃত্যের সময়ে উপস্থিত ছিলেন সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী, মল্লিকার্জুন খড়্গে-সহ কংগ্রেসের অন্য নেতারা। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়, বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এবং অন্য বিজেপি নেতারাও উপস্থিত ছিলেন সেখানে। তৃণমূল নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মলয় ঘটক সকালে দিল্লিতে কংগ্রেসের সদর দফতরে গিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে।

ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগেও এসেছিলেন মনমোহনকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। পড়শি পাহাড়ি রাষ্ট্রে থিম্পু সংলগ্ন একটি বৌদ্ধগুম্ফায় বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে শ্রদ্ধা জানাতে ভারতে সমস্ত দূতাবাস এবং উপদূতাবাসে ভুটানের পতাকা শনিবার অর্ধনমিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভুটান সরকার। মরিশাস সরকারও এ দেশে তাদের দূতাবাস এবং উপদূতাবাসগুলিতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পতাকা অর্ধনমিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর শেষকৃত্য কোথায় সম্পন্ন হবে, তা নিয়ে শুক্রবার কেন্দ্রের সঙ্গে বিরোধের পরিস্থিতি তৈরি হয় কংগ্রেসের।

 নিগমবোধ ঘাটে প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর শেষকৃত্যের সিদ্ধান্তে শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছিল কংগ্রেস। তারা চাইছিল, যমুনার তীরে রাজঘাটের আশপাশের কোনও জমিতে মনমোহনের শেষকৃত্য হোক, যেখানে ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী, অটলবিহারী বাজপেয়ীদের স্মৃতিসৌধ রয়েছে। এর আগে দেশের কোনও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর শেষকৃত্য এই শ্মশানে হয়েছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, নিগমবোধ ঘাটে শেষকৃত্য হলেও ওই স্থান স্মৃতিসৌধ নির্মাণের উপযুক্ত নয়, দাবি কংগ্রেসের। তারা চাইছিল এমন কোনও জায়গায় শেষকৃত্য হোক, যেখানে স্মৃতিসৌধ তৈরি করা যাবে। এই বিতর্কের আবহে বৃহস্পতিবার রাতেই একটি বিবৃতি প্রকাশ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কেন্দ্র জানায়, মনমোহনের স্মৃতিসৌধ তৈরির জন্য জায়গা দেওয়া হবে। কিন্তু সেই প্রক্রিয়ায় কিছুটা সময় লাগবে। মনমোহনের শেষকৃত্য এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার পর এই বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল কেন্দ্র।