মেয়র হবার দৌড়ে এগিয়ে যাচ্ছেন না তো কুনাল ঘোষ?

তৃণমূলের অন্দরে কি গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তৈরি হল? দলীয় নেতাদের ওপর কুনাল ঘোষের লাগাতার আক্রমনের পর ঘটনা কিন্তু সেদিকে ইঙ্গিত করছে! মূলত, দিন দুই আগে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দিকে আঙুল তুলেছিলেন রাজ্যের শাসক দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। পার্থর পাশে দাঁড়িয়ে রাজ্যের আর এক মন্ত্রী ফিরহাদ বলেছিলেন, কুণাল দলের কেউ নন। এবং সেই জবাব দিয়ে ফেসবুক লাইভ রবিবার করেছিলেন কুণাল ঘোষ। বলেছিলেন, মন্ত্রী যে তিনি নন, তা মনে করাতে হবে না। মন্ত্রিত্বের জন্য হ্যাংলা তিনি নন। এখানেই শেষ নয় কুনাল আরও জানান, মন্ত্রী হতে না পারলে, যাঁদের জীবন অসম্পূর্ণ, এসব তাঁদের দেখাবেন। এসব মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদ দেখাবেন না। আমাকে জীবন যা দেখিয়েছে, আমি তাঁর ঊর্ধ্বে আছি। আমি আনুগত্য দেখিয়েছি। জেলে বসে আমি যেমন লড়াই করেছি, তেমনই আমি মাসে দশ হাজার টাকা চাঁদা দলকে দিয়েছি। ব্যাঙ্ককে নির্দেশ দিইনি চাঁদা দেবেন না। জেল থেকে বেরোনোর পর কেন্দ্রীয় সরকার আমাকে একটি কমিটির চেয়ারম্যান করতে চেয়ে চিঠি দিয়েছিল। সাংসদ হিসেবে চেয়ারম্যান হলে অসুবিধা ছিল না। কিন্তু সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। তাই আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠবে, তার জবাব আমি নিজেই দেব। ভাড়াটে বক্তা দরকার নেই।

তবে সহকর্মীদের ওপর তোপ দেগে রবিবারই এই ঘটনার ইতি টানেননি কুনাল ঘোষ! অর্থাৎ গতকাল আত্মহত্যার চেষ্টার মামলায় কোর্টে হাজিরা দেবার সময় কাঠগড়ায় চোখের জল ফেলে কুণাল বাবু বলেন, ‘আইকোর মামলায় মঞ্চে যিনি বক্তৃতা করেছেন, তিনি আমায় পাগল বলেছিলেন’। কিন্তু তিনি এখন মন্ত্রী হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তাকে আগে জেলে ঢোকানো দরকার’।

উল্লেখ্য, কুনালের এসব মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক মহলের একাংশ জানাচ্ছে, মেয়র হবার লক্ষ্যে তির ছুড়ছেন না তো কুনাল ঘোষ? কারন তিনি মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দিকে আঙুল তোলার পর সোজাসুজি মেয়র ফিরহাদকে নিজের প্রশ্নবাণে জড়িয়ে ফেলেছেন তিনি। আর কুনালের মুখে মন্ত্রিত্বের কথা শোনা গেলেও, একবারেও জন্যও কিন্তু মেয়রের জন্য হ্যাংলামোর কথা শোনা যায়নি?

যদিও কুনাল ঘনিষ্ঠের মতে, এসব কিছুই নয়। মূলত, রাজ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ নিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আর এই প্রসঙ্গেই শুক্রবার কুণাল ঘোষ বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর পাশে দাঁড়ান। বরং অনেকটাই দায় চাপিয়ে দেন প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়‌এর ওপর। বলেন, ‘‌দলের মহাসচিব তথা তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিস্তারিত বুঝিয়ে বলতে পারবেন।’‌ সেই নিয়েই খোঁচা দেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বলেন, ‘‌কুণাল মন্ত্রিসভার সদস্য নন। আমাদের সব দায়িত্ব যৌথ। আমি সেই মন্ত্রিসভার সদস্য। পার্থদাও মন্ত্রিসভার সদস্য। তাই বিষয়টা পার্থদার একার নয়।’‌