সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা মেনে ‘নিষ্কৃতিমৃত্যু’ বা ‘মৃত্যুর অধিকার’ নীতি চালু করল কর্নাটক সরকার। এই নীতি অনুযায়ী, যে সমস্ত রোগী কঠিন ব্যাধিতে আক্রান্ত এবং যাঁদের রোগ নিরাময়ের সম্ভাবনা একেবারেই নেই, তাঁদের ‘মৃত্যু’ উপহার দেওয়া হবে। রোগী এবং তাঁর পরিবার চাইলে চিকিৎসকেরা তাঁর ‘শান্তিপূর্ণ মৃত্যু’ নিশ্চিত করবেন। কর্নাটকের স্বাস্থ্য দফতর এই ঘোষণা করেছে। তার পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী দীনেশ গুণ্ডু রাও সমাজমাধ্যমে এই প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করেছেন।
‘মৃত্যুর অধিকার’ কী ভাবে প্রয়োগ করবে কর্নাটক সরকার? যে কোনও রোগী চাইলে ‘নিষ্কৃতিমৃত্যু’ পাবেন না। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, দ্বিস্তরীয় মেডিক্যাল পর্যবেক্ষণের পরেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। অর্থাৎ, রোগীর শারীরিক পরিস্থিতি দু’টি ধাপে পরীক্ষা করে দেখবেন চিকিৎসকেরা। উভয় ক্ষেত্রে সবুজ সঙ্কেত মিললে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করা হবে। প্রথমে তিন জন চিকিৎসকের প্রাইমারি বোর্ড রোগীকে দেখবে। তারা যদি মনে করে রোগীর বেঁচে থাকার আশা শেষ, তবে দ্বিতীয় পর্যায়ে পরীক্ষা এবং পর্যালোচনা হবে। দ্বিতীয় মেডিক্যাল বোর্ডে আরও তিন জন অভিজ্ঞ চিকিৎসক এবং এক জন সরকার নিযুক্ত চিকিৎসক থাকবেন। দু’টি বোর্ডের রিপোর্ট এর পর আদালতে জমা দেওয়া হবে।
আদালত যদি রোগীর মৃত্যুতে সম্মতি দেয়, তবে চিকিৎসকেরা তা নিশ্চিত করবেন। যে রোগী লাইফ সাপোর্টে আছেন, তাঁর লাইফ সাপোর্ট সরিয়ে নেওয়া হবে। তবে এই গোটা প্রক্রিয়া নির্ভর করছে রোগীর পরিবারের উপর। পরিবার যদি তাঁর ‘নিষ্কৃতিমৃত্যু’র জন্য আবেদন জানায়, তবেই প্রক্রিয়া শুরু করবেন চিকিৎসকেরা। সম্প্রতি একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, যে সমস্ত রোগী কঠিন ব্যাধিতে আক্রান্ত এবং রোগ নিরাময়ের সম্ভাবনা একেবারেই নেই, তাঁদের কষ্ট লাঘব করা দরকার। রোগীর মৃত্যুর অধিকারের কথাও বলা হয়েছিল। শীর্ষ আদালতের সেই নির্দেশের পরেই ‘নিষ্কৃতিমৃত্যু’ নীতি কার্যকর করা হচ্ছে কর্নাটকে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সরকারের এই পদক্ষেপ রোগী এবং তাঁর পরিবারের জন্য স্বস্তির বার্তা বয়ে আনবে বলেই তাঁরা আশাবাদী।