তাঁর বিরুদ্ধে বিগত বেশকিছুদিন আগেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল ৷ অভিযোগের পরই এই মামলায় তৈরী হয় চার্জশিট ৷ ২১৫ কোটির আর্থিক তছরুপ মামলায় ইডির চার্জশিটে অভিযুক্ত অভিনেত্রী জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজ।
তাঁর সঙ্গে নাম জড়িয়েছে সুকেশ চন্দ্রশেখরের৷ সেই সূত্রেই জ্যাকলিনকে তলব করেছে ইডি৷ পাশাপাশি ফিক্সড ডিপোজিট সহ তাঁর সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে৷ কেড়ে নেওয়া হয়েছে বিদেশ যাত্রার অধিকার৷ তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক বিনিয়োগের তথ্য চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে।
যদিও অভিনেত্রীর পালটা দাবি, ওই ফিক্সড ডিপোজিটগুলি তাঁর নিজের কষ্টার্জিত৷ সুকেশ চন্দ্রশেখরের সঙ্গে কোনও যোগ নেই ওই টাকার। জ্যাকলিনের আইনজীবীর দাবি, তাঁর মক্কেল ষড়যন্ত্রের শিকার৷ তাঁকে ইচ্ছাকৃত ভাবে ফাঁসানো হয়েছে৷
ইডি-র অফিসারদের জ্যাকলিন জানিয়েছেন, সুকেশের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হওয়ার আগেই তিনি নিজের আয় থেকে এই সকল বিনিয়োগ করেছিলেন। ফিক্সড ডিপোজিটে থাকা ৭.২ কোটি টাকা সম্পূর্ণভাবেই তাঁর নিজস্ব সম্পত্তি।
অপরাধমূলকভাবে সংগৃহীত নয়৷ অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘আমার জীবনে যখন সুকেশের অস্তিত্বটুকুও ছিল না, তখন থেকে এই সম্পত্তি আমার। সবটাই এসেছে আমার বৈধ আয় থেকে।’’ আর্থিক তছরুপের মামলা মাথায় নিয়েই জ্যাকলিন জানান, তাঁর বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ, তিনি সুকেশের কাছ থেকে বহুমূল্যের উপহার পেয়েছেন।
গত বছর ইডি তাঁর বিরুদ্ধ যে চার্জশিট দাখিল করেছে, তাতে বলা হয়েছে জ্যাকলিন নিজে নিশ্চিত করেছেন যে, সুকেশের কাছ থেকে তিনি ‘গুচ্চি’, ‘শ্যানেল’-এর মতো বিলাসবহুল ব্র্যান্ডের তিনটি ডিজাইনার ব্যাগ উপহার পেয়েছিলেন।
এ ছাড়াও জ্যাকলিনকে জিমে পরার জন্য দুটি ‘গুচ্চি’র পোশাক, একজোড়া ‘লুই ভিতোঁ’র জুতো, দু’জোড়া হিরের কানের দুল, রঙিন পাথরের ব্রেসলেট এবং দুটি ‘হার্মিস’ ব্রেসলেট দিয়েছিলেন সুকেশ৷ যা তোলাবাজির টাকায় কেনা হয়েছিল বলেই অভিযোগ। এ ছাড়া একটি মিনি কুপার গাড়িও উপহার পেয়েছিলেন জ্যাকলিন, যা অবশ্য তিনি ফেরত দিয়ে দেন৷
অভিযোগ আরও আছে৷ জানা গিয়েছে, তহবিল তছরুপের মামলায় সুকেশ জেলে যাওয়ার পরেও জ্যাকলিনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন৷ জেলে বসেই জ্যাকলিনকে মেসেজ করতেন তিনি। তাঁদের গভীর সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে হতেই পুলিশের নিশানায় আসেন জ্যাকলিন।
গত ১৭ই অগাস্ট দিল্লি হাইকোর্টে অতিরিক্ত চার্জশিট পেশ করে ইডি৷ সেখানে স্পষ্ট বলা হয়, জেলবন্দি জালিয়াত সুকেশ চন্দ্রশেখরের কাছ থেকে নানা ভাবে লাভবান হয়েছেন জ্যাকলিন। সুকেশের তোলাবাজির প্রায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন অভিনেত্রী। যার মধ্যে ৭ কোটি টাকারও বেশি সম্পত্তি ইতিমধ্যেই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে৷
প্রসঙ্গত, এক ওষুধ সংস্থার প্রাক্তন মালিক শিবেন্দ্র সিং এবং মালবেন্দ্র সিং-এর পরিবারের সঙ্গে ২০০ কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগে সুকেশ এবং তাঁর স্ত্রী লিনা পলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই সুকেশের সঙ্গেই সম্পর্কে থাকার অভিযোগে একই মামলায় নাম জড়ায় বলিউড অভিনেত্রী জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজের।